মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকঞ্জি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
বিদ্যালয়ের মার্কেট অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে ব্রাহ্মণবিড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সাদী’র বেতন-ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে শিক্ষা অধিদফতর।
একই সঙ্গে বড় ধরণের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে নানা সময়ে সমালোচিত এই শিক্ষকের।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে সরাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালেদ জামিল খান তিনি বলেন, গত কয়েক বছর আগে বিদায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সাদী’র বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত করা হয়। সেই তদন্ত রিপোর্টের আলোকে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর( মাউশি) তার বেতন বন্ধ করে দিয়েছে।
২০১৮ সালের জুন মাসে জেলা প্রশাসক বরাবর অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সাহের উদ্দিন সহ ৫ জন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ইশরাতকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্ত শেষে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক বরাবর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেন। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সাদী এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কুতুব উদ্দিন ভূইয়া প্রতিষ্ঠানের নামে নতুন ব্যাংক হিসাব খুলে অর্থ আত্মসাৎ ও তছরুপের ঘটনা ঘটিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির একটি ভবন নির্মাণ করছেন দুই কোটি টাকা ব্যয়ে। অথচ এই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি কোনও নিয়ম মানা হয়নি। এই অর্থও লেনদেন করা হয়েছে নতুন ব্যাংক হিসাবে। এছাড়া বিভিন্ন অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে তদন্তে।
অভিযোগকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহের উদ্দিন বলেন, ‘একটি মার্কেট ভবন নির্মাণ করা হয় অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। এতে কোনও ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ করা হয়নি। মার্কেটের দোকান বরাদ্দের জন্য ৩০ জনের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা করে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে না রেখে অন্য আরেকটির মাধ্যমে অর্থ খরচ করছেন প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতি।
বতর্মান আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী গনকে বে- আইনী ভাবে বঞ্চিত রেখে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করিতেছে, উল্লিখিত বিষয়ে সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের করিতেছি।
অতএব বিষয়ে উল্লিখিত অনিয়ম সম্পর্কে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে আপনার মুহতি মনের মর্জি হয়। এই খরচের কোনও ক্যাশবই নেই। গাছ বিক্রির টাকা ব্যাংকের কোনও হিসাবে জমা দেননি। এসব অভিযোগ ছাড়াও বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এখন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করা হবে।
এব্যাপারে অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী মো.হামিদুল হক বলেন, ‘বিষয়টি অনেক বছর আগের। এসব অভিযোগ আমার সময়ের নয়। আমি দায়িত্ব নিয়েছিল মাত্র কয়েকমাস হলো।এ ব্যপার আমার কিছু জানা নাই।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বেতন ভাতা বন্ধের কথা স্বীকার করে অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সাদি এ প্রতিনিধিকে বলেন,‘বিষয়টি আমি জেনেছি। ১৮ সালে স্কুলের মার্কেটের বিষয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছিল। সাবেক চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন সভাপতি থাকা কালিন সময় মার্কেট হয়েছিল।আর সেই সময়ের ম্যানেজিং কমিটির কেউই এখন নাই। সেহেতু সব কিছু প্রধান শিক্ষকের উপরে বর্তায়। অবিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শেখ সাদী বলেন,আমি দেখেছি বর্তমানে আমার বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে।
Discussion about this post