নুরুল বশর মানিক,কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি,
কক্সবাজারের বনাঞ্চলে মানুষের বিচরণ বেড়ে যাওয়ায় বন্যহাতির আবাসস্থল এবং খাদ্য সংকট দেখা যাওয়ায় বন্য প্রাণিরা খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসছে।
মানুষের ফসল-ঘরবাড়ি রক্ষার্থে মানুষ বন্য হাতির উপর আক্রমণ চালিয়ে হত্যায় করছে এর পাশাপাশি বন্য হাতির মূল্যবান দাঁত চুরি করতেও বন্য হাতি হত্যা করছে একটি চক্র।
সর্বশেষ কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ধোয়াপালং এলাকায় ধানক্ষেতে চলে আসে একটি মা হাতি। সেখানে স্থানীয় মানুষের শক সার্কিটের ফাঁদে পড়ে হাতিটির মৃত্যু হয়। এরপর কিছু দুর্বৃত্ত শরীর থেকে হাতিটির মাথা ও পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরে কিছু দুর্বৃত্ত শরীর থেকে হাতিটির মাথা ও পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
এ ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলায় হাতি হত্যার মূল নায়ক দক্ষিণ খুনিয়া পালং এর ৩নং ওয়ার্ডের মির্জা আলীর দোকান এলাকার বাসিন্দা মৃত আলি হোসেনের পুত্র নজির আহমেদ (৭০) কে আটক করা হয়।তার নেতৃত্বে হাতিটি হত্যা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন নজির।
এছাড়া ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীর কালাপাড়ার বনাঞ্চলে একটি বাচ্চা হাতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ৮ দিনের ব্যবধানে ১৪ নভেম্বর কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালার জুমছড়ির বনাঞ্চলে ৩০ বছর বয়সী স্ত্রী হাতিকে গুলি করা হয়। ওই হাতি ১৬ নভেম্বর মারা যায়। একদিনের ব্যবধানে ১৫ নভেম্বর কক্সবাজার উপজেলার রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ির খরলিয়াছড়ায় বিদ্যুতের তার ও গুলি করে আরও একটি হাতিকে হত্যা করা হয়।
এছাড়া গত তিন বছরে কক্সবাজার ও আশপাশের অঞ্চলে অন্তত ১৬টি হাতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গুলি এবং বিদ্যুতের তারে জড়িয়েই বেশির ভাগ হাতির মৃত্যু হয়। এভাবে ধারাবাহিকভাবে হাতি হত্যার ঘটনা উদ্বেগ জানিয়েছে জেলার পরিবেশ সংগঠনগুলো।
এদিকে কক্সবাজার উত্তর ও দক্ষিণ বনবিভাগের অবহেলার কারণে জেলার বনাঞ্চলে মহাবিপন্ন এশিয়ান হাতি, একের পর এক হত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে। নিয়মিত টহল ও চোরাকারবারীদের ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায়ই মারা পড়ছে কক্সবাজারের বনাঞ্চলে মহাবিপন্ন এশিয়ান হাতি। গত ৩ বছরে ১৬ হাতি হত্যা করা হয়েছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির জানান, হাতি হত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তাছাড়া জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি হাতি হত্যা রোধে জেলার বিভিন্ন রেঞ্জে জনগণকে নিয়ে সভা সমাবেশ করা হয়েছে। অপরদিকে টহল আরো বেশি জোরদার করা হয়েছে।

































Discussion about this post