নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
২০২১ সালটা আমাদের জন্য কঠিন পরীক্ষার। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় সবকিছু লন্ডভন্ড। এরই মাঝে ক্র্যাবের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি কঠিন এক প্রতিকূল অবস্থার মাঝে কাজ করছে। করোনার এই দু:সময়ে শক্তভাবে হাল ধরেছেন সংগঠনের ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক।
নির্ধারিত সময়ের ১০-১৫ দিন পর চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি সর্বাধিক ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন। নির্বাচনের আগে তিনি সদস্যদেরকে বড় ধরনের কোন স্বপ্ন না দেখালেও দায়িত্ব গ্রহণের পর এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যা ক্র্যাবের মর্যাদা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। কিছু কাজ হাতে নেয়া হয় সদস্যদের কল্যাণে।
কার্যত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর জানুয়ারি মাসের অর্ধেক সময়, ফেব্রুয়ারি ও মার্চের অর্ধেক সময় অর্থাৎ মার্চে করোনার ধাক্কা শুরুর প্রাক্কালে দুই মাস হাতে সময় পায় কমিটি। এরপর শুরু হয় লকডাউন, করোনার ভয়াবহ বিস্তার। অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যায়। আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই মন্থর অবস্থা বিদ্যমান ছিল। তার মানে প্রায় ছয় মাস ক্র্যাবের বর্তমান কমিটিকে করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়। এর মাঝেও করোনার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কমিটির সদস্যরা কাজ করে যান।
এই বন্ধ্যা সময়েও যদি একনজরে চোখ বুলাই তাহলে দেখা যায়, কিছু দায়- দেনা নিয়ে যাত্রা শুরু করা বর্তমান কমিটির দায়িত্ব গ্রহণের ১৩ দিনের মাথায় ক্র্যাবের প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে একটি মানবিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান।
ওই সদস্যদের পরিবারের পাশে আর্থিক সহযোগিতাসহ মানবিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় কমিটি। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে ক্র্যাবের ইতিহাসে নৌপথে সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘ক্র্যাব ফ্যামিলি-ডে ২০২১’ উদযাপন করা হয়। মার্চের প্রথমার্ধে বর্তমান কমিটি বেশ কয়েক লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিটও করে।
এরপরেই শুরু করোনার বড় ধরণের ধাক্কা। অফিস-আদালত বন্ধ। ঘর থেকে বের হওয়া নিষেধ। ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির। এমন বাস্তবতায় কমিটি এক প্রতিকূল অবস্থার মাঝে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করে।
করোনায় সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের অনেকেই আক্রান্ত হন। সংগঠনকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হয়েছে নানাভাবে। কল্যাণমূলক কাজে মনযোগ দিতে হয়েছে।
আরো কয়েকটি বড় ধরণের কাজের মধ্যে বর্তমান কমিটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরুকে প্রধান করে অপর দুজন আইনজীবীকে ক্র্যাবের আইন পরামর্শক হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করে।
সদস্যদের স্বাস্থ্য সেবার কাজে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ১৬ সদস্যের একটি চিকিৎসক প্যানেল গঠন করা হয়। ক্র্যাব সদস্যদের মধ্যে বেশ বেশ কয়েকজন সদস্যের সন্তানকে দুই দফায় শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। এর একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সদস্যদের প্রত্যাশা ছিল ক্র্যাবের মর্যাদা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে একটি নিউজ পোর্টাল করা। ১ সেপ্টেম্বর ক্র্যাব নিউজ পোর্টালেরও যাত্রা শুরু হয়। উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এছাড়া ক্র্যাবের দৈনন্দিন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কীভাবে সম্ভব হলো এই করোনা মহামারীর মধ্যে এতগুলো কাজ- জানতে চাইলে ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক বলেন, কার্যনির্বাহী কমিটির সকল কর্মকর্তা, ক্র্যাবের সকল সদস্য এবং সাংবাদিক সমাজ ও অন্যান্য শুভাকাঙ্খীসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় সদস্যদের কল্যাণে নেয়া বেশ কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে। আরো অসামপ্ত কিছু কাজ রয়েছে- সেগুলো সম্পন্ন করতে হবে। যেসব কাজ শুরু করেছেন তার ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় মেয়াদে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন এমনটি শোনা যাচ্ছে- এ প্রশ্নে মিজান মালিক বলেন, আমার ওপর সদস্যরা যে আস্থা রেখেছে, আমি সে আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষায় চেষ্টা করছি।
সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কল্যাণকর কাজগুলোকে এগিয়ে নেবার জন্য তারা যদি আমাকে পুনরায় এই পদে চান, আমি তাদের চাওয়াকে সম্মান জানাবো। পেশাগত অনেক কাজের চাপের মাঝেও আমি ক্র্যাবকে নিজের পরিবারের মতো মনে করি। সেভাবেই সময় দিচ্ছি। ক্র্যাবের প্রতিটি সদস্যকেই আমার পরিবারের সদস্য মনে করি।
Discussion about this post