জামালপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
জামালপুরে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটিতে জামায়াতের সাবেক নেতাকে সভাপতি করায় দলের তৃনমুলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। দলীয় পদ ঘোষণার সাথে সাথে পদ বঞ্চিত নেতার নেতার বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পটকাবাজির ঘটনা ঘটেছে। পদ বঞ্চিত এক নেতাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পৌর আওয়ামী লীগ জামালপুর পৌরসভার ১২টি প্রশাসনিক ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টি ও সাংগঠনিক ৫টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষনা করা হয়। ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ পান ওয়ার্ড কাউন্সিলর এমদাদুল হক জীবন। নব্য এই সভাপতির নামে জেএমবি ও জামায়াত করার অভিযোগ উঠেছে । ২ কোটি টাকায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ তিনি বাগিয়ে নিয়েছে বলে গুঞ্জন চলছে জামালপুর শহরজুড়ে।
এদিকে পদ পাওয়ার পর পরই রাতেই এমদাদুল হক জীবনের কর্মী সমর্থকরা সভাপতি পদ প্রত্যাশি সাবেক কাউন্সিলর রাকিবুল ইসলাম রাজুর শহরের শেখের ভিটার বাড়িতে হামলা চালিয়ে দফায় দফায় ইটপাটকেল পটকা নিক্ষেপ করে হট্রগোল করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে জীবনের সমর্থক সাব্বির, হাসিব, রিফাতসহ ৫জনকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। রাতেই আটককৃতদের থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেছে রকিবুল ইসলাম রাজু।
তিনি বলেন, সকালে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে বগাবাইদ বোর্ডঘর যাওয়ার পথে জীবনের বাড়ির সামনে জীবনের ভাই জনি,জাকির ও সিফাত অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে হামলা চালায়। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসময় খবর পেয়ে রাজুর কর্মী সমর্থক ও স্বজনরা জীবনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও জীবনের গাড়ি ভাংচুর করে এবং জীবনকে লাঞ্চিত করেছে।
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, জীবন একসময় জেএমবি করতো। সেসময় তার সাথে সুসম্পর্ক ছিল ও একই সাথে চলাফেরা করতাম। জেএমবির সেকেন্ড ইন কমান্ড বাংলা ভাইকে তার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিল।বাংলা ভাইয়ের সাথে আমাকে পরিচয়ও করিয়ে দিয়েছিল। তার আশ্রয় প্রশয়ে শেখের ভিটা এলাকায় ছাত্রাবাস গুলোতে জেএমবির কর্মীরা থাকতো। সেসময় শেখের ভিটার ছাত্রাবাসগুলো থেকে অসংখ্য জেএমবির সদস্য গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব ও পুলিশ। । জেএমবি কোনঠাসা হয়ে পড়লে জামায়াতে ইসলামে যোগ দেয় জীবন। তংকালিন জেলা আমীর নুরুদ্দিন প্রফেসারের বডিগার্ড ছিল এই জীবন। সবসময় জীবন ওই জামায়াতের আমীরকে নিয়ে মোটর সাইকেলে চলাফেরা করতো। পরে বিএনপি ক্ষমতায় এলে শীর্ষ নেতাদের পিছনে অর্থ ব্যয় করে ক্ষমতার ছায়াতলে ভীড়ে যান। বিএনপির মিছিল মিটিংয়েও দেখা যেত। এবার আওয়ামী শিবিরে ভীড়ে বিগ বাজেট নিয়ে মাঠে নামেন জীবন। দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পৌর নির্বাচনে ১১ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত ও একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হন জামায়াত নেতা এমদাদুল হক জীবন। জামায়াত নেতা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ায় দলের মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী নেতাকর্মী ও শহরবাসীর মুখে মুখে গুঞ্জন চলছে ২ কোটি টাকার বিনিয়মে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতি পদ বাগিয়ে নিয়েছেন জামায়াত নেতা। এ মুখরোচক গুঞ্জন টক অবদি টাউনে পরিনত হয়েছে।
এ বিষয়ে পৌর কাউন্সিলর ও ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদ্য সভাপতি এমদাদুল হক জীবন সাংবাদিকদের বলেন, এলাকায় বোম ফোটাফুটি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে মাত্র। আমি জেএমবি জামায়াত বিএনপি করি নাই এবং টাকা দিয়ে পদ কেনার অভিযোগ সঠিক নয়। আওয়ামী লীগের ইতিহাসে টাকা দিয়ে পদ বিক্রির নজির নেই।
জামালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ জানান, মঙ্গলবার রাতে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের পদ দেওয়া হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে কমিটিতে পদ দেওয়া হয়েছে এটি অপপ্রচার মাত্র।
Discussion about this post