নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
ঢাবি শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামানের নারীর পর্দা বিরোধী বক্তব্য, হিজাবী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা এবং ভুক্তভোগীকে উগ্রবাদী বলার প্রতিবাদে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে । এসময় বক্তারা অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামানকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুর ০১. ৪০ টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করে।
গত মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) প্রাক্তন উপাচার্য ও ঢাবি অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান চাঁন গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে যারা পর্দা করে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে বাসায় থেকে পড়াশোনা করার পরামর্শ দেন ।
এ ছাড়াও পূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ২০১৯-২০ সেশনের ছাত্রীদের জোর পূর্বক নেকাব খুলে ভাইভা (মৌখিক পরীক্ষা) নেওয়া ও হেনস্থার অভিযোগ উঠে এ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম রাসেলের সভাপতিত্বে মানবনবন্ধনে বক্তব্য প্রদান করেন ইইই বিভাগের নেহাল মাহমুদ, পরিসংখ্যান বিভাগের মোহাম্মদ সাকিব, অর্থনীতি বিভাগের ফয়সাল মাহমুদ, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের আশিকুল ইসলাম ও তৌফিক আহমেদ।
ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এস এম রাসেল মানববন্ধনে বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার আদর্শ-ভূমি। এই দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং পোষাকের স্বাধীনতা রয়েছে। ক্যাম্পাসে মেয়েরা কোন পোশাক পরবে কোন পোশাক পরবেনা। এটা নির্দিষ্ট করে দেয়ার এখতিয়ার কারো নেই। কিন্তু সম্প্রতি পর্দা পালনকারী মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামান চাঁনমিয়া বারংবার হেনস্থার মুখে ফেলেছেন। শুধু এখানেই ক্ষান্ত না থেকে হিজাব পরিধান করায় হেনস্থার শিকার শিক্ষার্থীকে উগ্রবাদী দলের সদস্য বলে মন্তব্য করে ভিক্টিম ব্লেমিংয়ের অপরাধ ও করেছেন তিনি। তার এই অমূলক মন্তব্যের জন্য অবিলম্বে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।
বিবিএ ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম বলেন, মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঢাবির এই শিক্ষক দাবী করেন যে “তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে না এসে বাসায় লেখাপড়া করা উচিৎ।” বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সাথে পর্দা পালন করার কোন সাংঘর্ষিকতা নেই। শিক্ষাকে কখনোই কোন জাত, বর্ণ কিংবা পোশাকের সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ করার সুযোগ নেই। এবং এই ইস্যুকে মূখ্য করে একজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষার অধিকার ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা শিক্ষকসুলভ আচরণ হতে পারে না। এই মন্তব্য চরমভাবে নারী শিক্ষা বিরোধী। তার মন্তব্য সম্পূর্ণই ইসলাম বিদ্বেষপ্রসূত ও ইসলামী সংস্কৃতি বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ।
Discussion about this post