মোঃ সাইদুর রহমান,বরগুনা প্রতিনিধিঃ
সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়রুল ইসলাম টিটু হাওলাদারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ঐ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যানের ভাই টিটু জোমাদ্দারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি বরগুনার বেতাগী উপজেলার ৭নং সরিষামুড়ি ইউনিয়নের। ঘটনার বিষয় জানতে অভিযুক্ত টিটু জোমাদ্দারের মুঠোফোনে ফোন দিলেও ফোন রিসিভ না করার কারনে যোগাযোগ করা সম্ভাব হয়নি।
নিহত টিটু হাওলাদার সরিষামুড়ি ইউনিয়নের ভোড়া গ্রামের মৃত্যু আবদুল কাদের হাওলাদারের ছেলে। নিহত টিটু হাওলাদার ঐ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
নিহতের মেয়ে ডলি আক্তার প্রতিবেদককে বলেন, অনেক আগে থেকেই সরিষামুড়ি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ঈমাম হাসান শিপন জোমাদ্দারের সাথে টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে নিহত টিটু মেম্বারের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। গত ২১ শে জুন এর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার বাবা (নিহত টিটু হাওলাদার) স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউসুফ শরীফের পক্ষে নির্বাচন করায় বর্তমান চেয়ারম্যান ঈমাম হাসান শিপন জোমাদ্দার তার বাবা (নিহত টিটু হাওলাদার) এর উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়। আজ সোমবার (১৯ জুলাই) সকালে বেতাগী সোনালী ব্যাংকে আমার মা শিল্পী বেগম ও বাবা টাকা তুলতে গেলে একটি কালো নোহা মাইক্রোবাসে তাদের পিছু নেয় চেয়ারম্যান শিপন জোমাদ্দারের ছোট ভাই টিটু জেমাদ্দারসহ আরো কয়েকজন। টিটু জোমাদ্দার এর পিছু নেওয়ার খবর জানতে পেরে আমার বাবা (নিহত টিটু হাওলাদার) পালিয়ে বাড়ির দিকে আসার পথে বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ বাজারের দক্ষিণ প্বার্শে জালাল আহমেদ এর ইটভাটার সামনে থেকে দুপুর অনুমান সাড়ে ১২টার সময় আমার মায়ের সামনে থেকে আমার বাবা (নিহত টিটু হাওলাদার) কে চেয়ারম্যান শিপন জোমাদ্দারের ছোট ভাই টিটু জোমাদ্দার ও তার দলীয় লোকজন নিয়ে জোর করে তাদের কালো নোহা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।
মেয়ে আরো বলেন, মা শিল্পী বেগম সাথে সাথে বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপুকে মুঠোফোনে আমার বাবা টিটু হাওলাদারকে নিয়ে যাওয়ার সংবাদ জানানোর জন্য ফোন দিলে বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার মায়ের ফোন রিসিভ করেন নি। অনেক খোজাখুজির পরে বিকেল সাড়ে ৩টার সময় আমার বাবা টিটু হাওলাদারকে ছোট গৌরিচন্না মাদ্রাসার রাস্তার পাশে দুই পা ভাঙ্গা ও অচেতন অবস্থায় বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও তার সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা আমার বাবাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়রাজ আমার বাবা টিটু হাওলাদারকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।
আমার বাবা আনোয়ারুল ইসলাম টিটু হাওলাদারকে পাওনা টাকা ও নির্বাচনী দলাদলির জেড়ে চেয়ারম্যান শিপন জোমাদ্দার এর নির্দেশে তার ছোট ভাই টিটু জোমাদ্দার ও তার দলীয় সঙ্গীরা আমার বাবাকে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙ্গে দিয়েছে, শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাথারী মারপিটের কারনেই আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আনোয়ারুল ইসলাম টিটুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা সম্পর্কে জানার জন্য অভিযুক্ত টিটু জোমাদ্দারের মুঠোফোনে ফোন দিলেও ফোন রিসিভ না করার কারনে যোগাযোগ করা সম্ভাব হয় নি।
অভিযুক্ত টিটু জোমাদ্দার বরগুনা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ জাহাঙ্গীর কবিরের বোনের ছেলে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়রাজ মুঠোফোনে ময়নাতদন্ত না হওয়া পর্যন্ত সাক্ষাৎকার দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাখওয়াত হোসেন তপু মুঠোফোনে বলেন, সরিষামুড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আনোয়ারুল ইসলাম টিটুর মৃত্যুর সংবাদটি আমি শুনেছে। আমি নিজেই আনোয়ারুল ইসলাম টিটুর মরদেহ উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। নিহত আনোয়ারুল ইসলামের মরদেহ ময়না তদন্তের অপেক্ষায় আছে।
ময়না তদন্ত শেষে নিহতের পরিবার যদি থানায় অভিযোগ করলে, তাহলে অভিযোগের ভিত্তিতে আমি যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করবো।
Discussion about this post