বাধন রায়,ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠি ও পিরোজপুরসহ আশেপাশের জেলার গ্রামগুলোতে বর্ষা মৌসুমে নৌকার কদর অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় অনেক বেড়ে যায়। তাই নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত এখানকার কারিগররা। এসব নৌকা বিক্রি হচ্ছে দেশের বৃহত্তম নৌকারহাট পিরোজপুরের আটঘর এলাকার ভাসমান হাটে। করোনার কারণে হাটে ক্রেতা নেই। ফলে নৌকার কারিগর, ফড়িয়া আর ইজারাদসহ দুই জেলার ৫ হাজার পরিবার পড়েছেন চরম বিপাকে।
বাগান থেকে পেয়ারা কিংবা অন্যান্য ফসল সংগ্রহ করায় ব্যবহৃত হয় ছোট ছোট ডিঙি নৌকা। এসব পণ্য বাজারজাত করার কাজেও নৌকার বিকল্প নেই। নদী-নালা খালবিল বেষ্টিত ঝালকাঠিসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বর্ষা মৌসুমে নৌকার কদর বেড়ে গেছে। কৃষকদের কাছে নৌকার বাড়তি চাহিদার যোগান দিতে জেলার নৌকা তৈরির কারিগররা দিন রাত শ্রমদিয়ে যাচ্ছেন।
সপ্তাহের শুক্রবার জেলার সীমান্তবর্তী পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর এলাকার একটি খালে ভাসমান হাট বসে। গত এবছর করোনার মহামারিতে স্বাস্থ্য বিধি রক্ষায় প্রায় তিন মাস হাট বন্ধ ছিল। এবছর বর্ষার শুরুতেই হাট শুরু হয়। প্রতি বছরের মত এবারও হাটে নৌকার সমারোহ। ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের চেয়ে নৌকার দাম দ্বিগুন বেড়েছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন কাঠ, লোহাসহ নৌকা তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও সে তুলনায় বাড়েনি নৌকার দাম। এর ওপর করোনার কড়াল থাবা কেড়ে নিয়েছে হাটের বেচা-বিক্রি। এতে চরম লোকশানের শঙ্কায় এখন হাটের ইজারাদার, নৌকার প্রান্তিক কারিগরসহ এর সঙ্গে জড়িতরা।
বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের পেয়ারহাট, সবজির হাট, কৃষি, মাছ ধরা এমনকী অনেক গ্রামের এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি যেতেও নৌকাই একমাত্র বাহন। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে নৌকা কিনতে এসেছেন এ হাটে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বেচা-বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানালেন হাট ইজারাদার।
তবে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মোঃ জোহর আলী জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্থ নৌকার করিগরদের সাধ্যমত সহযোগিতা করা হবে।
গ্রামের ঐতিহ্য ডিঙি নৌকা পণ্য সংগ্রহে কৃষকদের যেমন উপকারে আসছে, তেমনি নৌকা তৈরি ও বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কারিগররা। নৌকা তৈরির উপকরণের দাম কমানো এবং বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নৌকা তৈরির কারিগররা।
Discussion about this post