মুমতাজুল কবীর, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
উত্তর আফ্রিকার তিউনিসিয়ার সেনাবাহিনী যে ৩০ বাংলাদেশিকে জীবিত উদ্ধার করেছে, তাদের মধ্যে মাদারীপুর সদর উপজেলার আছেন ২৩ জন। আবার এই উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের নয়াচর গ্রামেরই আছেন ১৪ জন। দুদিন আগেও কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছিল নয়াচর গ্রাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাতে সন্তান ও ভাইদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে স্বজনরা এখন কিছুটা শান্তি পাচ্ছেন।
মাদারীপুর নয়াচর গ্রামের সেন্টু মন্ডল এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে পরিবারের দাবি। একই গ্রামের ১৪ জনসহ ২৯ জন প্রাণে বেঁচে গেলেও তাদের ফিরে পাওয়ার শঙ্কায় পরিবারের মাঝে বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা। সেদিনের ঘটনায় মাদারীপুর জেলার একজন নিখোঁজসহ ৩০ জনের পরিচয় মিলেছে।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার জানায়, ধারদেনা ও বাড়িটা পর্যন্ত বিক্রি করে আমাদের ভাই-সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়েছি একটু ভালো থাকার জন্য। তবে তাদের দাবি, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের বিদেশেই যেন একটি কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। না হলে মরণ ছাড়া পরিবারগুলোর আর কোনো উপায় থাকবে না। তারা সবাই সাড়ে সাত লাখ টাকা দিয়ে মহসিন নামের এক মানব পাচারকারীর মাধ্যমে ইতালি যাচ্ছিলেন বলে জানায় পরিবার।
নিখোঁজ সেন্টু মন্ডলের শ্বশুর আবদুর রব বেপারী বলেন, আমার তিনটি নাতি, অনেক কষ্ট করে ধারদেনা করে সাড়ে সাত লাখ টাকা দিয়ে লিবিয়া দিয়ে ইতালি পাঠিয়েছিলাম কিন্তু তার কোনো খোঁজ নাই।
মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, আমারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানতে পেরেছিলাম তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় মাদারীপুরের ৩০ জন রয়েছেন। এরপরই আমরা তদন্ত শুরু করি এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত। আমার ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন মানব পাচারকারীকে শনাক্ত করেছি। শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে ৮৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী লিবিয়ার জাওয়ারা উপকূল থেকে একটি নৌকায় করে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালি যাচ্ছিলেন। ইউরোপে প্রবেশের সময় উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এরপর তিউনিসিয়ার সেনাবাহিনী উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে ৩৩ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে জীবিত উদ্ধার করে।
Discussion about this post