বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অবস্থানরত পুলিশের হাতে ফুল তুলে দিল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
আজ ৩ আগস্ট ২০২৪(শনিবার) সকাল থেকে বৃষ্টির মধ্যে শহরের রাস্তায় রাস্তায় শিক্ষার্থীদের ঢল নামে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে চারপাশ। শান্তিপূর্ণ এ মিছিল থেকে পুলিশ সদস্যদের হাতে লাল গোলাপ ও জাতীয় পতাকা তুলে দেয় আন্দোলনকারীরা।
সকাল ১০ টায় নগরীর প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে অভিভাবকদেরও যোগ দিতে দেখা যায়। এসময় তাদের হাতে ‘জাগো বাহে’, ‘ওরা কথায় কথায় শিকল পরায় আমাদের হাতে পায়ে’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘একদফা এক দাবি’ সহ নানা লেখা সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে যায় পুরো আন্দোলন মঞ্চ। এখানে দেড় ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে চলতে থাকে স্লোগান। এ সময় ‘আমার ভাই মরলো কেন, জবাব চাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে…, ‘রক্তের দাগ দিচ্ছে ডাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক….’ ইত্যাদি স্লোগান ভেসে আসছিল প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে। স্লোগানে কার্যত উত্তাল হয়ে পড়ে নগরী। শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে থাকলেও কোথাও বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
পরে সেখান থেকে শুরু হয় মিছিল। পথে পথে মিছিলে যোগ দেন শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। মিছিলটি প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে শহরের ডিসি মোড় হয়ে চেকপোস্ট ঘুরে মেডিক্যাল মোড় দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মোড় হয়ে টাউন হলে গিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা।
দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার প্রদক্ষিণ করা এ মিছিলে নানা স্লোগান দিতে থাকেন তারা। আন্দোলনে আবু সাঈদসহ নিহত ছাত্র জনতার হত্যাকারীদের বিচার দাবি ও সরকারের পদত্যাগের দাবি জানান তারা।
টাউন হলের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে অভিভাবকরা বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল। কিন্তু সরকারের বাহিনীর গুলিতে তাদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত। শত শত মায়ের বুক খালি হয়েছে। পুলিশ শিক্ষার্থীদের নির্বিচারে গ্রেফতার করছে।
আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা চাই। আমরা সমবেত হয়েছি সন্তানদের জীবন বাঁচানোর জন্য।যে যেখানে আছি আমরা সন্তানদের পাশে থাকবো। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত এ সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
মিছিলে অংশ নিয়ে সাদমান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার ভাইদের গুলি করে মারা হলো কেন। তারা তো তাদের অধিকার চেয়েছিল। কিন্তু তাদেরকে গুলি করে মারা হলো। আমরা আমাদের ভাইদের হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
আঁচল নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের দাবি না পূরণ হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলনে আছি। এখন এক দফা দাবি হলো এই সরকারের পদত্যাগ। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনের অঙ্গীকার করে তারা চলে যান।
Discussion about this post