সফিকুল ইসলাম শিল্পী, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
মা শব্দটিতে যেন এক গভীর মায়া—মমতা আর ভালোবাসা জড়িয়ে আছে। মা আমাদের সকলের প্রিয় শব্দ।সন্তান ভূমিষ্ট দেওয়া থেকে শুরু করে তাকে বড় করে তোলা পর্যন্ত মা অক্লান্ত পরিশ্রম করে। সমাজে যেখানে মা কে সম্মান জানানো হয়। মূলতঃ মাকে সম্মান ও ভালোবাসার জন্য সন্তানরা ছুটবে হৃদয়ের অনুভ’তি দিয়ে ।রবিবার দুপুরে এক অসহায় মায়ের খবর পেয়ে এক অসহনীয় দৃশ্য চোখে পড়ে।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌরশহরে বাঁশবাড়ি গ্রামের একটি (ভাড়া বিহিন) প্রায় পরিত্যাক্ত বাড়িটি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা একজন অসুস্থ্য বৃদ্ধা মা ও ছেলের বসবাস। পৃথিবীর বুকে এখনো বেঁচে থাকা প্রায় ১১১ বছর বয়সেও এ বৃদ্ধার কপালে জোটেনি নিজেস্ব একটুকরো ঘর। নেই তার নিদিষ্ট ঠিকানা। শতবষীর্ এ বৃদ্ধার নাম শরীফা খাতুন। মসলিম উদ্দিন মিঞাজির ঘরে জন্ম নিয়ে ঘর বেধেছিলেন স্বামী মমতাজ উদ্দিনের সাথে।সংসারে অভার অনটনের মাঝেও বেশ সময় কেটে যাচ্ছিল। হঠাৎ স্বামী মারা যাওয়ার পর শুরু হয় শরীফা খাতুনের কষ্ট আর বেঁচে থাকার যুদ্ধ। বিরবির করে শরীফা খাতুন নিজেই বলেন আমার ৬ মেয়ে আর ৪ ছেলের কথা। বাকি সন্তানরা তাকে(শরীফা খাতুন) কে দেখে না এমন অভিযোগ করেন ।
বর্তমানে একমাত্র আব্দুল শহীদ নামের মেঝো ছেলেই বৃদ্ধা মাকে দেখাশুনা করেন।
আব্দুল শহীদের সাথে কথা বলে জানা য়ায়, তার মাকে অন্য সন্তানরা খোঁজ খবর তেমন রাখেন না। শহীদও এখন বয়সের ভারে তিনিও বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছেনে। অসুখ তাকেও পীছু ছাড়ছেনা। অভাবের সংসারে অসুস্থ্য স্ত্রী ও মাকে ঔষুধ কিনে দিতে তার অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পান তাতে নুন ভাত খেয়ে কোন মত দিন চালিয়ে নেনে তিনি। এমন কষ্টের কথা বলতে বলতে চোখে পানি চলে আসে আব্দুল শহীদের। তিনি আরো জানান , মা তার নিজ হাতে ভাত খেতে পারেনা। রাতে কাজ সেরে এসে মাকে খাইয়ে দেন শহীদ এমনকি গোসল করিয়ে দেন নিজ হাতে।
এখন পরিত্যক্ত যে বাসায় দেখাশুনার দায়িত্বে আছেন তার প্রিয় মমতাময়ী মাকে নিয়ে সে বাড়িটিও বিক্রি হয়েছে জানতে পারেন শহীদ। এর পর বৃদ্ধা মাকে নিয়ে কোথায় যাবেন তিনি নিজেও জানেন না। কোথায় ঠায় হবে স্ত্রী ,সন্তান আর বৃদ্ধা মাকে নিয়ে মেঝো ছেলে শহীদের।
এ বৃদ্ধা মাকে ফেলে অন্যান্য সন্তানরা যেখানে বিমূখ অথচ সন্তানের জন্য সব থেকে বেশি যে আত্মত্যাগ করতে পারে সেই নামটিই হলো মা। বিশেষ করে কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই সে মাকে। পৃথিবীর সব মায়েরা যেন সুখী থাকেন, সন্তান হিসেবে এই যেন হয় আমাদের সবার দায়িত্ববোধ।
Discussion about this post