সোনারগাঁ(নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এসিল্যান্ডের গাড়ির চাপায় ওয়াহিদ হোসেন দিলীপ (৪৫) নামের এক টাইলস ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার বিকেলে ঐতিহাসিক আমিনপুর এলাকায় গাড়ি চাপায় নিহত হন। নিহত ওয়াহিদ হোসেন দিলীপ সোনারগাঁ পৌরসভার রাইজদিয়া গ্রামের মসলেউদ্দিনের ছেলে। দিলীপকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যান। তথ্য সংগ্রহ করতে সাংবাদিকরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ডা. মোশারফ হোসেন সিজান তাদের ওপর চড়াও হয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেন। এক পর্যায়ে সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইব্রাহিমকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নিহতের লাশ সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।
নিহতের ভাতিজা যোবায়ের হোসেন জানান, উপজেলার সোনারগাঁ পৌরসভার রাইজদিয়া গ্রামের মসলেউদ্দিনের ছেলে ওয়াহিদ হোসেন দিলীপ কামাল ভূঁইয়া মার্কেটে দোকান নিয়ে টাইলস ব্যবসা করেন। রোববার বিকেলে তিনি আদমপুর বাজারে যাওয়ার পথে আমিনপুর এলাকায় সাদা রঙের সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশরার (ভূমি) মো. ইব্রাহিমের সরকারী গাড়ি দ্রুত তগতিতে এসে তাকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থল থেকে দিলীপকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
সূত্র জানায়, সাদিপুর ইসলামিয়া সিনিয়র আলীম মাদ্রাসায় গভর্ণিংবডির নির্বাচনে দায়িত্ব শেষে বাসায় ফেরার পথে এসিল্যান্ড মো. ইব্রাহিম, এসিল্যান্ড কার্যালয়ের প্রধান সহকারী দিপাল দেবনাথ ও কর্মচারী সোহানকে বহন করে গাড়িটি দ্রুত গতিতে এসে আমিনপুর এলাকায় গাড়িটি এক পথচারীকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলে ওই পথচারী মারা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোনারগাঁ পৌরসভা থেকে আদমপুর সড়কের আমিনপুর এলাকায় বিকেলে ৫টার দিকে সোনারগাঁ এসিল্যান্ডকে বহনকারী (নারায়ণগঞ্জ-ঠ-১১-০০২১) গাড়ি দ্রুতগতিতে এসে দিলীপকে চাপা দিয়ে বাড়ির টিনের বেড়া ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে যায়। এসময় গাড়িতে থাকা এসিল্যান্ড মো. ইব্রাহিম ও গাড়ি চালক গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যায়। গাড়িতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোবাইল কোর্ট লেখা ছিল।
শামীম নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এসিল্যান্ডের গাড়িটি সকলের কাছে পরিচিত। যে গতিতে গাড়িটি আসছিল। এমন গতিতে মহাসড়কেও গাড়ি চলে না। লিংক রোডে মনে হয়েছে ১০০ গতিতে গাড়িটি আসছিল। গাড়িটি পথচারী দিলীপকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কি কারনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালো সেটা বুঝতে পারছি না।
সোনারগাঁ থানার ওসি এসএম কামরুজ্জামান পিপিএম বলেন, আহত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে মারা যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দিলে তা গ্রহন করা হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, নিহত পরিবারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। এসিল্যান্ডের গাড়ির চালকের গাফলতি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাড়িটি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Discussion about this post