স্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পাওনা টাকা চাওয়ায় নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অবশেষে ঘটনার তিনদিন পর গত শুক্রবার রাতে ওই নারী বাদি হয়ে সোনারগাঁও থানায় তিনজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর লিটনসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার গ্রেপ্তারকৃতদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- লিটন মিয়া ও আসাদুর রহমান।
এদিকে ভুক্তভোগী ওই নারী এখনও সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, তার শারিরিক অবস্থায় এখনো উন্নতি হয়নি। অনেক গুলো পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। রোববার ডাক্তার আসলে তা দেখানো হবে।
গত বুধবার ওই নারীকে অর্ধচেতন অবস্থায় উপজেলার পূর্ব সনমান্দি চকের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে উদ্ধার করেন ওই এলাকার কয়েক ব্যক্তি। এ সময় তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। গায়ের কাপড়চোপড় ছেঁড়া ছিল।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী বলেন, সোনারগাঁ পৌরসভার দুলালপুর নোয়াইল গ্রামের লিটন মিয়ার মালিকানাধীন মার্বেল কারখানায় চাকরি করেন। বেতন ও ধার হিসেবে নেওয়া টাকাসহ লিটনের কাছে তিনি মোট ২লাখ ৮০ হাজার টাকা পান। এর আগেও শরবতের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে লিটন তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এসব বিষয়ে তিনি আদালতে লিটনের বিরুদ্ধে মামলাও করেন।
ভুক্তভোগীর ভাষ্য, মামলাসহ নানা বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার লিটনের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয় তাঁর। একপর্যায়ে তিনি আর চাকরি করবেন না জানিয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে যান। দুপুর ১২টার দিকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা যেতে আদমপুর বাজার থেকে রিকশায় ওঠেন। পথে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সামনে থেকে অপরিচিত এক নারী তাঁর সঙ্গে সেই রিকশায় ওঠেন। কিছুক্ষণ কথা বলার পর ওই নারী তাঁর মুখের সামনে কিছু একটা ধরলে অচেতন হয়ে পড়েন। পরদিন বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টির ঝাপটায় জ্ঞান ফিরলে দেখেন, একটি ভুট্টা ক্ষেতের মাঝখানে পড়ে আছেন। সেখান থেকে উঠে দাঁড়াতে চাইলেও পারেননি।
ভুক্তভোগী বলেন, শুক্রবার থানায় ডেকে নিয়ে পুলিশ আরো একটি লিখিত কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন। সেই কাগজটি মামলার অভিযোগ বলে জানিয়েছেন পুলিশ। সেই অভিযোগটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়। ওই নারী বলেন, ২৪ ঘন্টা অচেতন থাকার মধ্যে আমার সঙ্গে কি করা হয়েছে আমি জানতে পারিনি। তাই আমি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা নেওয়ার জন্য বলেছি। আমার ভাই আসবে। তখন আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাাতালে ভর্তি হবো।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক তদন্ত মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নারীর ধর্ষণ চেষ্টায় মামলা গ্রহন করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Discussion about this post