আমিনুর রহমান, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট হাতীবান্ধা উপজেলায় পারিবারিক কলহের জের ধরে এক গৃহবধূর শরীরে এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে তার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ীর পরিবারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা আছিয়া বেগম নামে এক জনকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার রাত ৮ টার দিকে উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের গেন্দুকুড়ী এলাকায় আতোয়ার হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।
আহত গৃহবধূকে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় ঐ গৃহবধূর বাবা আব্দুল মালেক রাতেই ৫ জন আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ একজনকে আটক করে। বাকিরা পলাতক রয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ বছর আগে ঐ উপজেলার নওদাবাস ইউনিয়নের পিওরপাড় এলাকার মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল মালেকের মেয়ে মাহমুদা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় গেন্দুকুড়ী এলাকার আতোয়ার হোসেনের ছেলে হামিদুল ইসলামের। বিয়ের পর তাদের সংসারের একটি কন্যা সন্তানও জন্ম হয়। এদিকে মেয়েটির গায়ের রং কালো হওয়ায় বিয়ের কিছুদিন পর থেকে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ও স্বামী মেয়েটির উপর অত্যাচার করে থাকে। ঐ গৃহবধূকে তাড়ানোর জন্য তারা বিভিন্ন ফন্দি করলে সে স্বামী সংসার ছেড়ে যেতে অপরাগতা প্রকাশ করে। এরপর শুরু হয় তার উপর মানুষিক নির্যাতন।
এমতাবস্থায় বুধবার রাত ৮ টার দিকে শ্বশুর আতোয়ার ও শ্বশুড়ি হামিদা বেগম ওই গৃহবধূর শরীরে এসিড নিক্ষেপ করেন। এতে ঝলসে যায় তার শরীরের পিছনের অংশ। এসময় গৃহবধূ মাহমুদার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান। এ ঘটনায় আহত গৃহবধূর বাবা আব্দুল মালেক বাদী হয়ে আতোয়ারকে প্রধান আসামী করে ৫ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ মাহমুদা বলেন, আমার শ্বশুর- শ্বাশুড়ির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলছে। আমাকে একা পেয়ে মেরে ফেলার জন্য তারা এসিড ঢেলে দেন।
অভিযুক্ত আতোয়ার হোসেন বলেন, এটা সম্পুর্ন মিথ্যা অভিযোগ। তারা কেউ ঐ গৃহবধুর শরীরে এসিড দেয়নি। ঘটনার সময় তিনি গেন্দুকুড়ী বাজারে ছিলেন। তাদেরকে হয়রানি করার জন্য এটা কোন চক্রান্ত।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর শুনে হাসপাতালে গিয়ে আহত গৃহবধূর অবস্থা দেখে আসি৷ পরে মাহমুদার শশুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকা আছিয়া বেগম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
Discussion about this post