রাকিব হোসেন, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও বিভিন্ন অভিযোগে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ আবু ওবায়েদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। পুলিশের তদন্ত ও সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়া, স্বাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানোয় ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়কসহ চার যুবলীগ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সিরাজুল ইসলাম গত ৩০ শে জুন মৌখিক ভাবে আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ আবু ওবায়েদ এর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, ঘুষ, মাদক সংশ্লিষ্টতা, সাধারণ মানুষকে হয়রানী ও ভয়ভীতি দেখানোর ব্যাপারে জয়পুরহাট পুলিশ সুপারের নিকট জানায়। পরে তিনি গত ১ জুলাই জয়পুরহাট পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন ও সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুস সালাম, ডিএসবি ইন্সপেক্টর কাওসার আলীসহ তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন পুলিশ সুপার। শুক্রবার সকাল ১০টায় তদন্ত টিম তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদে যায়। তদন্ত চলাকালে তিলকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মেহেদী হাসান দিপু, যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন, তাদের সহযোগী আরিফুল ইসলাম মানিক, রেজাউল করিম মানিকসহ চার নেতাকর্মীকে পুলিশের তদন্ত কাজে বাঁধা ও স্বাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানোর সময় তদন্তস্থল থেকে দুপুরে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাদেরকে সরকারি ও তদন্ত কাজে বাঁধা, স্বাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানোয় মামলা দিয়ে শনিবারে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী ও তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সিরাজুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ আবু ওবায়েদ ঘুষ, দুর্নীতি, মাদক সংশ্লিষ্টতা, সাধারণ মানুষকে হয়রানী ও ভয়ভীতি ব্যাপারে জয়পুরহাট পুলিশ সুপার বরাবর মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করার পর শুক্রবার ১২টার দিকে তদন্ত চলাকালে ঐ ওসির দালালরা উপস্থিত হয়ে স্বাক্ষীদের ভয়ভীতি ও আমাকে নানা রকম হুমকি দেয়। তাৎক্ষনিক তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের চার জনকে গ্রেফতার করে। আমি এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি। তাদের দলবল বাহিনী যে কোন মুর্হূতে আমার ক্ষতি সাধন করতে পারে। এদিকে গ্রেফতারকৃত ৪ জন ইউনিয়ন যুবলীগের নেতাকর্মী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা যুবলীগের সভাপতি সুমন কুমার সাহা।
এব্যাপারে আক্কেলপুর থানা অফিসার ইনর্চাজ (ভারপ্রাপ্ত) সেলিম মালিক বলেন, বেআইনী জনতায় দলবন্ধ হইয়া পথরোধ পূর্বক সরকারি কাজে বাঁধা দান ও হুমকি প্রদানের অপরাধে তদন্তস্থল থেকে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শুক্রবার রাতে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তকারী কর্মকর্তা কাওসার আলী বাদী হয়ে ওই ৪ জনসহ অজ্ঞাত আরও ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এবং শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ আবু ওবায়েদকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাম কবির বলেন। তদন্তস্থলে সরকারি কাজে বাঁধা ও স্বাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানোয় তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জয়পুরহাটের যে কোন পুলিশ যদি অন্যায়ের সাথে জরিত থাকেন অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post