সোনারগাঁ পৌরসভার কৃতীসন্তান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেত মোহাম্মদ হোসাইন, গনযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক উপ-সম্পাদক, সাবেক উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। সাবেক সহ-সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।সমন্বয়ক, জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০১৯, নারায়ণগন্জ-৩, সদস্য-ডাকসু নির্বাচন পরিচালনা কমিটি-২০১৯ বলেন আজ বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের পথে একটি ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭১-এর এ দিনে পাকিস্তানের কারাগারে আটক জাতির জনকবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক করে গঠিত বিপ্লবী সরকার মেহেরপুর বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে শপথ গ্রহন করে। শপথ গ্রহনের এই স্থানটির নামকরণ করা হয় ‘মুজিবনগর’ এবং এই দিনটি ইতিহাসে স্থান পায়‘মুজিবনগর দিবস’ হিসেবে।
মুক্তিসংগ্রামের ধারাবাহিকতায় দিনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই বিপ্লবী সরকারই হচ্ছে বাংলাদেশের ৯ মাসেরমুক্তিযুদ্ধের বৈধ সরকার, যাদের কৃতিত্ব হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকে সংঘটিত করা এবং বিজয় অর্জন পর্যন্ত যথাযথ নেতৃত্বদান। এই সরকারঅত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, ক‚টনৈতিক ও প্রচার ক্ষেত্রে বিশ্ব জনমত গঠন এবং ১ কোটি উদ্বাস্তুরপুনর্বাসন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছিল।
আজকের এই দিনে মুজিবনগর বিপ্লবী সরকারের নেতৃত্বদানকারী জাতীয় ৪ নেতাসহ ওই সরকার পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্তসবার প্রতি রইল আমাদের গভীর শ্রদ্ধা। কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের এমএনএ এবং এমপিএদেরঅধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়। এই মন্ত্রিপরিষদ এবং এমএনএ ওএমপিএরা ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করেন।সে সরকারে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়।
তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকেমন্ত্রিপরিষদের সদস্য নিয়োগ করা হয়। ১১ এপ্রিল এম এ জি ওসমানীকে প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়। এরপর ১৭ এপ্রিল১৯৭১ পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরে বৈদ্যনাথতলার এক আমবাগানে মন্ত্রিপরিষদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানআয়োজিত হয়। দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশকে ‘গণপ্রজাতন্ত্রীবাংলাদেশ’ রূপে ঘোষণা করা হয়।
এরপর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি একে একে প্রধানমন্ত্রী ও তার তিন সহকর্মীকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং নতুন রাষ্ট্রের সশস্ত্রবাহিনীরপ্রধান হিসেবে কর্নেল এম এ জি ওসমানী এবং সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ পদে কর্নেল আবদুর রবের নাম ঘোষণা করেন।এরপর সে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ পাঠ করা হয়। এই ঘোষণাপত্রেই বলা হয়, ‘সংবিধান প্রণীত না হওয়াপর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি থাকিবেন।’
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পরও নতুন সংবিধান প্রণীত হওয়ার আগ পর্যন্ত এই ঘোষণাপত্রসংবিধান হিসেবে কার্যকর ছিল। আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ৪ নেতাসহ যারাই নেতৃত্ব দিয়েছেন মুক্তি সংগ্রামে-যুদ্ধক্ষেত্রে, জাতি গঠনে- ইতিহাস তাদের যে স্থান দিয়েছে সে মতোই সম্মান দিতে হবে। মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের মাইলফলক ঘটনা ওদিবসগুলোকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ, তাৎপর্য অনুধাবন এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে দরা আমাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব।
Discussion about this post