নারায়ণগঞ্জের করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে খায়রুল আলম হিরু (৩৮) নামে এক গিটারিস্টের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে বারোটার দিকে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান।
হিরো নারায়ণগঞ্জে সংগীতাঙ্গনের একজন পরিচিত মুখ এবং জনপ্রিয় বেজ গিটারিস্ট। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের দেওভোগ এলাকায় বাসিন্দা। রাতে মারা যাওয়ার পর হিরোর মরদেহ বাড়ির বাইরে এনে রেখে দিলেও করোনা আতংকে লাশের পাশে এলাকার কোনো মানুষই আসেনি। সারারাত হিরোর মরদেহ বাড়ির বাইরে পড়েছিল।
হিরোর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হিরো গত দুই বছর ধরেই স্ক্রিনজনিত রোগে ভুগছিলেন। এর মধ্যে গত ২৬ মার্চ থেকে তার জ্বর-সর্দি ও শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। পরে শহরের একজন প্রাইভেট ডাক্তারকে দেখালে বেশ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। এতে তার ফুঁসফুসে পানি জমা ছিল বলে চিকিৎসকেরা জানায়। পরে ব্যবস্থাপত্র লিখে দিয়ে ওষুধ খেতে বলেন এতেই সাকি সেরে যাবে। কিন্তু জ্বর সর্দি আর শ্বাস কষ্ট না কমায় তার পরিবার এরমধ্যে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যায়। সেখানে চিকৎসক ভর্তি না নিয়ে পুনরায় ব্যবস্থাপত্র লিখে দিয়ে তাকে ছেড়ে দেন।
সোমবার রাতে হিরোর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ফের ঢাকায় নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করেন কিন্তু জ্বর-সর্দি শ্বাস কষ্টে ভোগা রোগী শুনে চালক করোনা আতঙ্কে তাকে না নিয়েই পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর রাত সাড়ে বারোটার দিকে হিরো মারা যান। পরে তার মরদেহ বাড়ির বাইরে এনে রেখে দেয়া হয় হলে করোনা আতংকে এলাকার কেউ আসেনি। সারারাত লাশটি সেখানেই পরেছিল। সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ও সিটি কর্পোরশেন কর্তৃপক্ষ লাশটি দাফনের উদ্যোগ নেয়।
পরিবারের অভিযোগ, হিরুর মৃত্যুর পর সিভিল সার্জন অফিসে খবর দেওয়া হলেও দীর্ঘ বার ঘণ্টা পর মঙ্গলবার দুপুরে তারা লাশের নমুনা সংগ্রহ করতে আসে। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর লাশের শরীরে ভাইরাস পাওয়া যাবে কিনা এই নিয়ে আশংকা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা আলী জানান, নগরীর পশ্চিম দেওভোগ এলাকায় করোনার উপসর্গ নিয়ে এক যুবক মারা গেছে খবর পেয়ে সিটি কর্পোরেশনের মেডিকেল টিম লাশ উদ্ধার করে দাফনের ব্যবস্থা করে। আমাদের সব কিছু গোছাতে একটু দেরী হয়েছে। তবে দুপুর দুইটার পর সিভিল সার্জনের একটি টিম শহরের পাইকপাড় কবরস্থানে ওই যুবকের নমুনা সংগ্রহ করতে যায়।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানান, যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর দুপুরে আমাদের টিম গেছে নমুনা সংগ্রহ করতে। দীর্ঘ সময় পার হওয়ায় লাশের নমুনা সংগ্রহ কতটুকু কার্যকর হবে এমন প্রশ্নে সিভিস সার্জন জানান, এমন উপসর্গে মৃত ব্যক্তির নমুনা সিভিল সার্জন সংগ্রহ করার ব্যাবস্থা নেই তারপরও আমরা পাঠিয়েছি।
Discussion about this post