বর্তমানে এই পৃথিবীতে যে রোগগুলোতে মানুষের মনে প্রচণ্ড ভয়-ভীতি ও আতংক ছড়িয়েছে তার মধ্যে একটি করোনা ভাইরাস। এ কোভিড-১৯ কারণে প্রতিদিন ঘটছে অজস্র মানুষের মৃত্যু। থামিয়ে দিয়েছে অনেকের জীবন কাব্য, অনেকের জীবনকে করেছে ছন্দহীন। কেউ আবার লড়াই করে ফিরে এসেছেন তবে তাদের সংখ্যা খুবই কম। ইতিমধ্যে এ কোভিড-১৯ প্রতিরোধে তৈরি হয়েছে অনেক সচেতনতাও।
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ছিল মোঃ অমিত হাসান মিরাজ, ব্লাড ফর নারায়ণগঞ্জ এর সাধারণ সম্পাদক। অমিত করোনা ভাইরাস এর সাথে লড়াই করার গল্প নিয়ে তার ফেইসবুক পোস্ট থেকে-সারা শরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কিছুদিন পরেই আমি জানতে পারলাম আমি করোনা ভাইরাস পজিটিভ। স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের কাছ থেকে এটা শোনার পর মনে হল, আমার জীবনের নিঃসঙ্গ রাতের শুরু।
করোনা আমার জীবনকে বদলে দিয়েছে। আর এ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সংগ্রামের পুঁজি ছিল দৃঢ় মনোবল ও মনের অদম্য জোর। “আমি কখনও মনে করিনি আমাকে অল্প কিছু দিন বাঁচতে হবে। আমার বিশ্বাস ছিল, আমি একদিন পুরোপুরি সুস্থ হব ইনশাআল্লাহ”। তবে একটা কথা না বলেই নয় শুরুর পর্যায়ে ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় দ্রুত সুস্থ হওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে। করোনা ভাইরাস শক্তিশালী হওয়া সত্বেও আমি হাল ছাড়েনি। অফুরন্ত প্রাণশক্তি নিয়ে আমি ফিরে এসেছি আপনাদের সবার মাঝে। আলহামদুলিল্লাহ।
করোনা ভাইরাস যেহেতু একটা মহামারী তাই এলাকার কিছু মানুষের মুখে মুখে এটাও শুনেছি যে আমি হয়ত বাঁচব না। গ্রামের মানুষের একটা বদ্ধমূল ধারনা যে করোনা হলেই শেষ। তাদের এমন চিন্তাভাবনা আমার ও আমার পরিবারের মনোবল নষ্ট করে দেয় কিছুটা। মানুষের রোগ অর্ধেক ভালো হয় আত্মবিশ্বাসের কারণে আর তাই আত্মবিশ্বাসটা বাড়ানোর জন্য নিজেকে নিজে অনুপ্রাণিত করি। সাথে ছিল আমার পরিবার ও সহকর্মীদের উৎসাহ।
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি। ”এই অসুস্থতা, তা যাই হোক না কেন, আমার জীবনধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে দেবো না,”
তারপর শুরু করলাম নিয়ম করে গরম পানি খাওয়া, গরম পানির ভাপ নেয়া, লবণযুক্ত গরম পানির গরগরা করা, নিয়মিত আদা, লং, এলাচ, দারুচিনি দিয়ে চা খাওয়া, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-ই জাতীয় খাবার খাওয়া আর মায়ের হাতের নানান পুষ্টিকর খাবার। এভাবেই আমার জীবন ধীর গতিতে চলতে শুরু করলো। আর এসবের মধ্যে আশা ছিল যে একদিন এসব কষ্টের দিন শেষ হবে আর আমি সুস্থ হব নিশ্চয়ই।
যাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলেই নয় তারা হলেন মো: সাইদুল ইসলাম স্যার (উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সোনারগাঁ উপজেলা), লিয়াকত হোসেন খোকা স্যার (মাননীয় সংসদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ-৩) ব্লাড ফর নারায়ণগঞ্জ তথা সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এর ভাই-বোন গুলো এবং আমার এলাকাবাসী, এটা যদি সত্যি হয় যে, তাদের একটু হাসি বা সহায়তা, আন্তরিকতা আমার মনের করোনা পজিটিভকে, করোনা নেগেটিভ এ পরিবর্তন করেছে, আমার দিনকে উজ্জ্বল করেছে , সর্বোপরি আমার বাবা ও মায়ের দো’আ ও আল্লাহর রহমতে আমার জীবন পরিবর্তনেও সহায়তা করেছে।
আলহামদুলিল্লাহ (সব কিছুর উর্ধ্বে আল্লাহ পাকের ইচ্ছে ছিলো) আবারও বলছি করোনাকে জয় করা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র মানসিক শক্তির কারণে আর এই মানসিক শক্তিই আমার ইচ্ছাশক্তিকে জাগিয়ে রেখেছে আর এই ইচ্ছাশক্তিই আমার ভেতর এর আশাবাদকে দৃঢ় করেছে যে, আলহামদুলিল্লাহ আমি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছি৷ আল্লাহর কাছে লক্ষ কোটি শুকরিয়া।
পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি, সোনারগাঁ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো: ফিরোজ মিয়া বলেন, সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক এবং কভিড-১৯ স্বেচ্ছাসেবক প্রিয় ছোট ভাই অমিত হাসান মিরাজ করোনা প্রতিরোধে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে তার করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯ পজেটিভ) শনাক্ত হয়ে ছিল। আলহামদুলিল্লাহ অমিত এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আল্লাহর কাছে লক্ষ কোটি শুকরিয়া যে আল্লাহ তাকে শেখা দান করেছেন। আমি অমিত হাসান মিরাজের নামের আগে বীরযোদ্ধা উপাদি যোগ করিলাম।
মানবিক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা- মোহাম্মদ হোসাইন,
গনযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক উপ-সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। বলেন-সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক, আদরের ছোট ভাই, অমিত একজন স্বেচ্ছাসেবী মানুষ। মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে করতে আজ নিজেই করোনা পজিটিভ হয়েছিল। তার ভালো কাজের জন্য মহান আল্লাহ তা’য়ালা তাকে দ্রুত সুস্থ্য করছেন।
Discussion about this post