বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক. একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, মুক্তচিন্তার লেখক কামাল লোহানীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সভাপতি হাফিজ আদনান রিয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান এক শোক বিবৃতিতে বলেন, কামাল লোহানী ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ,স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন সর্বক্ষেত্রে অগ্রসর একজন মানুষ। সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনে লড়াইয়ে আত্মনিবেদিত ছিলেন কামাল লোহানী। সাংস্কৃতিক আন্দোলনসহ বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে তিনি ছিলেন আমাদের একজন অভিভাবক শক্তি। আমাদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের চেতনার বাতিঘর। রাজনীতি আর সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে ষাটের দশক থেকে তিনি রাজপথে সোচ্চার। ’৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে খন্ডিত ও বিকৃত করার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। দেশের সুস্থ এবং গণ সংস্কৃতি বিকাশের আন্দোলনে অসামান্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। রাষ্ট্রযন্ত্রের ভ্রুকুটির তোয়াক্কা না করে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার লড়াকু যোদ্ধা। সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে কমরেড কামাল লোহানী নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। একজন সাংস্কৃতিক সংগঠক ও নৃত্যশিল্পী হিসেবে ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালনে সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তাঁর ছিল দৃঢ় ভূমিকা। শতবর্ষ পালনের আয়োজনে ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্যে তিনি বজ্রসেনের ভূমিকায় অংশ নিয়ে প্রশংসিত হন।
জাতি শুধু একজন প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার অসাধারণ যোদ্ধাকে নয় , আজীবন কমিউনিস্ট আর্দশের প্রতি আস্থাশীল একটি প্রতিষ্ঠানকেও হারালো। দেশের জন্য এ ক্ষতি অপূরণীয়। এ শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার নয়।
বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, কামাল লোহানী তরুণদের ভালোবাসতেন। তরুণদের তিনি উৎসাহিত করতেন। স্বপ্ন দেখাতেন। একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার তাগিদ দিতেন তিনি। কখনো তরুণদের সৃজনশীল কাজে উপেক্ষা করেননি। তাদের আহবানে তিনি সাড়া দিয়েছেন। অসুস্থতার ভেতরেও তিনি উপস্থিত থাকতেন। উদ্বুদ্ধ করেছেন।
বিবৃতিতে যুব ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ প্রয়াত কামাল লোহানীর শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
Discussion about this post