এম.এম মিজানুর রহমান রাজ,ডামুড্যা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন (বিএনএফ) এর অর্থায়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন জনসেবা প্রশিক্ষিত যুব সমিতি জেপিজেএস সহায়তায় একটি গাভী পালন করে ৪ বছরের ব্যবধানে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার মালিক হয়েছেন বিধবা সুফিয়া বেগম।
ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের ভাদুরী কান্দি গ্রামের বিধবা সুফিয়া বেগমের অভাব অনটন দেখে স্থানীয় মেম্বারের সহযোগিতায় জেপিজেএস থেকে ২০১৭ সালে একটি বকনা বাছুর পান তিনি। সেই বাছুর লালন পালন করে এখন দুইটি পূর্ণাঙ্গ গাভী সহ ৪টি গরুর মালিক সে। যার মাধ্যমে তিনি ইতিমধ্যেই দুধ বিক্রি করে তার গরু পালনের ঘরটি পাকা করেছেন। গরু জন্য উন্নত খাস চাষ করার লক্ষ্যে ক্রয় করেছেন ৬ শতাংশ জমি। এতে সে সংসারের অভাব ঘুচিয়ে ২ কন্যার বিবাহ সম্পন্ন করেছেন। একমাত্র ছেলেকে বিয়ে দিয়ে ঘরে এনেছেন ছেলে বউ। এখন বউ শ্বাশুরী মিলে গরু পালন করেন। আর ছেলে ছোটখাটো ব্যবসা করে। তাদের সংসারে অভাবের পরিবর্তে এখন বিরাজ করছে সুখের পায়রা।
স্থানীয় মেম্বার জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেদ এর মাধ্যমে জানতে পারি এনজিওর মাধ্যমে আমাদের ইউনিয়নে গভীর অসহায়, বিধবাদের সাবলম্বি করার জন্য কিছু বকনা বাছুর বিতরণ করবে। তখন আমি সুফিয়াকে একটি গরু দেওয়া জন্য চেয়ারম্যান সাহেবকে অনুরোধ করলে সে এনজিওর মালিক দীনেশ চন্দ্র দাসকে বিষয়টি দেখার আহবান জানান। সে সরেজমিন তদন্ত করে সুফিয়াকে একটি গাভী প্রদান করেন। সেই গাভীটি লালন পালন করে সুফিয়া প্রথম বছরই দুধ বিক্রি করেছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। এর পরের বছর তার দুইটি গাভী হওয়ায় বর্তমানে একটি পুরুষ গরু সহ ৪টি গরু রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী কোরবানীতে তার পুরুষ গরুটি ভালো দামে বিক্রি করা যাবে। তার অপর একটি গাভী কিছুদিনের মধ্যে আবার বাচ্চা দিবে। বলতে গেলে একটি গাভী পালনের মধ্য দিয়েই সুখের ঠিকানা খুজে পেয়েছেন সুফিয়া।
স্থানীয় ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক পিন্টু বলেন, জেপিজেএস এর মাধ্যমে আমার ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত নারীদের সাবলম্বি করার জন্য গাভী বিতরণ করেছি। তাদের মধ্যে যারা সাবলম্বি হয়েছে তাদের একজন হচ্ছেন সুফিয়া বেগম। তিনি পরিশ্রমের মাধ্যমে একটি গরু থেকে এখন ৪টি গরুর মালিক। আল্লাহর রহমতে তিনি এখন আমার দৃষ্টিতে একজন সচ্ছল নারী উদ্যোক্ত। জেপিজেএস ও (বিএনএফ) এর এ সহযোগিতার জন্য ইউনিয়নের সেবক হিসেবে তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
জেপিজেএস এর নির্বাহী পরিচালক দীনেশ চন্দ্র দাস বলেন, বিএনএফ এর অর্থায়নে ডামুড্যা উপজেলা কনেশ্বর ইসলামপুর ও ধানকাঠি ইউনিয়নে আমরা ছাগল, গরু ও ভ্যান বিতরণ করেছি। তাদের বেশির ভাগ সুবিধা ভোগীই এখন সচ্ছলতা পেয়েছে। তারা দারিদ্রতা কাটিয়ে সচ্ছল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদেরই একজন সুফিয়া বেগম। হতদরিদ্র এই সুফিয়া বেগম নিজের ভাগ্য পরিবর্তানের পাশাপাশি একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তার মত নারীকে সহায়তা করতে পেরে বিএনএফ ও জেপিজেএস নিজেকেই সফল মনে করছে।
Discussion about this post