মোঃশাওন জোমাদ্দার,পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃবঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পশ্চিম উপকূলে অর্থাৎ বাংলাদেশের দিকেই ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় “আম্ফান”।আর ক্রমেই বাড়ছে ঝুঁকি।
আম্ফান” – ধেয়ে আসছে – এ নিয়ে সারাদেশের মত পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের জনমনে সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক বিরাজ করছে।এখানকার মানুষের মনে বেশি আতঙ্কের কারন জানতে চাইলে অনেকেই ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর “সিডর” এর সেই ভয়াল থাবায় ঝড়ে যাওয়া প্রানগুলোর তথা “আইলা, ফনী ও বুলবুল” এর মত ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় গুলোর তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সারা বিশ্ব তথা বাংলাদেশে করোনা আতঙ্ক চলমান পরিস্থিতিতে আগন্তুক বিপদের কথা বলে । বিশেষ করে মির্জাগঞ্জ উপজেলার চরখালী ও মেন্দিয়াবাদ এলাকার প্রায় ১৩-১৫ গ্রাম খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।যেখানে সিডরে প্রায় শতাধিক মানুষ মারা গিয়েছিল।
এরপর আইলা, রেশমী, বিজলী, ফনী ও বুলবুলসহ আরও অনেক দূর্যোগের স্বীকার মির্জাগঞ্জের বিশেষ করে চরখালী, মেন্দিয়াবাদ, কাকড়াবুনিয়া, ভয়াং, মাছুয়াখালী, ভিকাখালী এলাকার মানুষগুলো ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বারবার এধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগের পাশাপাশি মহামারী করোনা স্বীকারের ধারাবাহিকতায় আবার এই ঘূর্ণিঝড় “আম্ফান” -এর আগমন। যেখানে পায়রা নদীর পারঘেঁষে উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় বেড়িবাঁধ নেই। ভেঙে বিলিন হয়ে গেছে সর্বনাশা পায়রার বুকে। এসব জায়গার মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে। এদিকে আবহাওয়া বার্তার পূর্বাভাসে মংলা ও পায়রা সমূদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই উপকূলবর্তী এলাকায় বিশেষ করে খুলনা ও বরিশালের উপর আঘাত হানতে পারে “ঘূর্ণিঝড় আম্ফান”।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বললে জানা যায়, এ উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষি নির্ভর বলে এখানকার কৃষকদের ক্ষেত থেকে এখন পর্যন্ত গ্রীষ্ম মৌসুমের শষ্যাদী তুলতে পারেনি। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আসছে শুনে জানমাল নিয়ে আতঙ্কে আছে তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় করনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। যেহেতু মংলা ও পায়রা সমূদ্র বন্দরকে ০৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে সেহেতু আমার উপজেলার ৫৭ টি সাইক্লোন সেল্টার ( আশ্রয়ন প্রকল্প) গুলো আমার অফিসে বসে সার্বিক খোজঁ খবর নেওয়ার জন্য কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সতর্ক এবং সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় “আম্ফান”- এর আঘাত মোকাবেলার জন্য উপজেলার সকল সাইক্লোন সেল্টারগুলো উম্মুক্ত রাখা হবে , সাইক্লোন সেল্টারগুলোতে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখা হবে, বাজারে বাজারে বলা হবে শুকনা খাবার, খাবার স্যালাইন সহ প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো যাতে করে মানুষের পেতে সমস্যা না হয় সেজন্য মজুদ রাখতে এবং যে সকল সাইক্লোন সেল্টারে বিদ্যুৎ এবং সোলারের ব্যবস্থা নেই সেগুলোতে বিকল্পভাবে আলোর ব্যবস্থা করতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে। এছাড়াও ঘূূূূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় সকল প্রকার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এবং উপজেলার সব জায়গায় মাইকিং ও উপজেলাবাসীকে সচেতন করে।
Discussion about this post