এস.এম আরিফুল ইসলাম আরিফ :
বিষ পান করা রেশমা খাতুন(২২) নামের এক রোগীর ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মৃতের মায়ের অভিযোগ তাকে হত্যা করা হয়েছে।
জানাগেছে, রেশমা খাতুন (২২) নামের ঐ যুবতীর বিয়ে হয় হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রাধানগর গ্রামের আব্দুল ওহাবের ছেলে সোহেলের সাথে। সংসারে শিহাব(৬) নামের একটি সন্তান রয়েছে। সোহেল মুরগীর ব্যবসা করে।যৌতুকের টাকার জন্য মাঝে মধ্যে কলহ বিবাদ লেগেই থাকতো।
রেশমা খাতুন কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের মোশারেফ হোসেনের মেয়ে। মোশারেফ হোসেনের সাথে রেশমার মা তাছিরোনের ছাড়াছাড়ি হয়েছে অনেক আগেই। ছাড়াছাড়ির পরে বাবার বাড়ি সদর উপজেলার শংকরপুর গ্রামে মেয়েকে নিয়ে থাকতো তাছিরোন। বাবা-ভাইয়ের সহযোগীতায় মেয়ে লালন-পালন করে বিয়ে দিয়েছিল সোহেলের সাথে।
তাছিরোন প্রতিবেদককে জানান,প্রায় প্রায়ই টাকার জন্য রেশমাকে মারধর করত জামাই সোহেল।১০-১৫ হাজার টাকা দিলে কিছু দিন মুরগীর ব্যবসা ভালোই চলতো।তখন আর কোন বিবাদ থাকতো না। টাকা ফুরিয়ে গেলে আবার নির্যাতন করতো।
শংকর গ্রামের আনজুরা বেগম জানান, কিছু দিন আগে রেশমা মায়ের কাছে আসতে চাইলে যেতে দিতে রাজি হয়নি সোহেল ও তার মা। সে রেশমাকে বলে বাড়ি থেকে যেতে হলে বাদি রেখে যেতে হবে।এই কারণে আবার নির্যাতন শুরু করে।
রেশমার মামি রাশিদা বেগম জানান,নির্যাতনের কারণে স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে এর আগে অনেক অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার আমাদের এখান থেকে কিছু লোকের রাধানগরে যাওয়ার কথা ছিল।কিন্তু ধান কাটার ব্যস্ততার কারণে যেতে পারেনি। এর মধ্যে সোহেল ও তার মায়ের মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারে বৃহস্পতিবার ভোরে বিষ পান করে রেশমা।আমরা দুপুরে খবর পেয়ে রেশমাকে আনতে গেলে সোহেলের মা আমাদের কাছে দেয়নি।তারা রেশমার চিকিৎসাও করায়নি ভালো করে। গোলাম ও টোটন নামের দুজন পল্লী চিকিৎসক দিকে বাড়িতেই চিকিৎসা করিয়েছেন। আমরা পরবর্তীতে স্থানীয় লোকের সহযোগীতায় রেশমাকে নিয়ে এসে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। এশার আযানের দিকে রেশমা মারা যায়।
রেশমার খালাতো ভাই লাভলু হাসান জানান, আমার খালাতো বোনকে ওরা নির্যাতন করে জোর করে বিষ খাইয়েছে ।এই কারণে ভালো কোন হাসপাতালে নিয়ে না এসে গ্রাম্য ডাক্তার নামে মাত্র দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছে। ভালো করে চিকিৎসা করালে রেশমা মারা যেত না। যৌতুক লোভী সোহেল ও তার মায়ের বিচার দাবি করেন তিনি।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে। পরে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।রিপোর্টে যদি আসে নির্যাতন করা হয়েছে তাহলে হরিণাকুণ্ডু থানাতে মামলা করতে পারবে রেশমার পরিবারের লোকজন।
Discussion about this post