মেহেদী হাসান ,জামালপুর প্রতিনিধিঃ
নির্বাচনী সহিংসতায় ১৬৯২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করায় পুলিশের ভয়ে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার চার গ্রামের প্রায় ১৫/১৬ হাজার মানুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অভিভাবকদের সাথে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীও গ্রাম ও বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। ফলে মেরুরচর, ফকিরপাড়া, কলকীহারা ও বাঘাডুবা বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ। মামলার আসামী হয়ে মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও পলাতক রয়েছেন। ফলে মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক সপ্তাহ যাবৎ তালাবদ্ধ।
প্রধান শিক্ষক পলাতক, স্কুল তালাবদ্ধ ও শিক্ষার্থীরা পলাতক থাকায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর কোভিড-১৯ টিকাদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, গত ৫ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটচলাকালে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে পুলিশের উপর হামলা, ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও পুলিশের গাড়ীতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মেরুরচর, ফকিরপাড়া, কলকীহারা ও বাঘাডুবা গ্রামের ৯২ জন নামীয়সহ অজ্ঞাত ১৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ।
গ্রেফতার হয় ১১ জন। ৭ জনের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। ঘটনা ঘটার পর ও মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার আতংকে মেরুরচর, ফকিরপাড়া, কলকীহারা ও
বাঘাডুবা গ্রামের ১৫/১৬ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। লাশ দাফনের লোক নেই উল্লেখিত গ্রাম গুলোতে। গত এক সপ্তাহে উল্লেখিত গ্রাম গুলোতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশের উপজেলার একটি গ্রাম থেকে জানাযা পড়িয়ে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় লাশ দাফন করা হয়েছে। এ্ পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের সাথে শিশু ও শিক্ষার্থীরও পালাতে বাধ্য হয়। মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়সহ ৪ গ্রামের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। মামলার আসামী হয়ে গ্রেফতার
এড়াতে মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামও পালিয়ে ঘুরছেন। স্কুল বন্ধ, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পলাতক থাকায় মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ৪ গ্রামের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর কোভিড-১৯ টিকাদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকলে উল্লেখিত চার গ্রামের শিক্ষার্থীরা ১৫ জানুয়ারি মাসের মধ্যে টিকা দেওয়ার সুযোগ পাবেনা।
এব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছারোয়ার আলম জানান, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে উপযুক্ত বয়স্ক শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ প্রতিরোধে টিকাদান শেষ করার কঠোর নির্দেশনা আছে। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যারা টিকা দিতে পারবে না তাদের বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত কোন কিছু বলার সুযোগ নেই। তারা স্বশরীরে স্কুলে উপস্থিত থাকতে পারবে না। তবে উল্লেখিত তারিখের মধ্যে টিকাদান শেষ করার তাগিদ রয়েছে।
এব্যাপারে বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম সম্রাট জানান, উল্লেখিত গ্রামে উপস্থিত মহিলাদের মাধ্যমে নির্দোষ ব্যাক্তিদের নিজ ঘর বাড়িতে ফেরার আহবান করা হয়েছে। যারা নির্দোষ তারা ঘরে ফিরলে পুলিশের কোন আপত্তি নেই। তবে দোষীদের বিষয়ে পুলিশ কঠোর।
Discussion about this post