দেলোয়ার হোসেন রাজিব,ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
২ বছরেও তারাকান্দাস্থ শেখ মুজিব কলেজের দেয়াল ঘেঁষা বিদ্যুতের খুঁটি স্থানান্তর হয়নাই ফলে আটকে গেছে ভবন নির্মাণকাজ । ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলাধীন নিভৃত পল্লী কালিয়া নদীর তীরে চরপাড়া গ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাস্বরূপ প্রতিষ্ঠিত শেখ মুজিব কলেজের দেয়াল ঘেঁষা পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিদ্যুতের একটি খুঁটি স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেও দীর্ঘ ২ বছরেও তা স্থানান্তর করানো সম্ভব হচ্ছে না। এতে কলেজটির সম্প্রসারিত অংশের ভবন নির্মাণ কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ও বাধাঁগ্রস্ত হচ্ছে কলেজটির সকল উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড ।
জানা গেছে, এই বিদ্যুতের খুটিটি অন্যত্র প্রতিস্থাপনের জন্য শেখ মুজিব কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জামাল উদ্দিন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে গত ০৫/০৪/২০১৯ ইং তারিখে একটি আবেদন করেন। এই আবেদনে ফুলপুর তারাকান্দা আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ন ও গণপুর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এম.পি খুঁটিটি স্থানান্তরের জন্য সুপারিশ করেন। প্রতিমন্ত্রীর সুপারিশের প্রেক্ষিতে বোর্ড চেয়ারম্যান স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে খুঁটি স্থানান্তরের জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু ২ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হলেও পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহ অঞ্চল-৩ এর জেনারেল ম্যানেজার খুঁটি স্থানান্তরের বিষয়টি মোটেই আমলে নিচ্ছেন না। প্রতিমন্ত্রীর সুপারিশ ও বোর্ড চেয়ারম্যানের নির্দেশকে তিনি উপেক্ষা করে চলছেন। এতে কলেজের উন্নয়ন কাজ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ।
খুঁটি স্থানান্তরের জন্য জিএম ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের রহস্যজনক কর্মকান্ড জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। জাতির জনকের নামে প্রতিষ্ঠিত একটি কলেজের এই বিদ্যুতের খুটির জন্য ভবন নির্মাণ কাজ আটকে গেছে। স্থানীয় পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের জিএম ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সব জেনেও খুঁটি স্থানান্তরের কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। ছাত্র অভিভাবক, শিক্ষক, কর্মচারীদের জিজ্ঞাসা এই খুঁটি স্থানান্তরের জন্য আর কতকাল অপেক্ষা করতে হবে।
স্থানীয় লোকজনদের সাথে যোগাযোগ করলে এরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন আমাদের পিছিয়ে পড়া এলাকায় শেখ মুজিব কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় গরীব জনগোষ্ঠীর সন্তানেরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পেয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মূল ভবন সম্প্রসারন জরুরী হয়ে দেখা দিয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ এর ব্যবস্থা গ্রহন করলেও পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে ভবন সম্প্রসারন কাজ আটকে গেছে। অনতিবিলম্বে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি স্থানান্তরের দাবী করে বলেন ব্যবস্থা গৃহীত না হলে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে যেকোন পদক্ষেপ নিতে আমরা এলাকাবাসী বাধ্য হবো। আভাস পাওয়া গেছে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি প্রদানসহ বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্ততি নিচ্ছে কলেজের অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন।
তারাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ বাবু প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী রণু ঠাকুর কলেজ পরিদর্শন করেছেন এবং বিদ্যুতের খুঁটিটি পর্যবেক্ষন করেছেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের প্রিয় কিংবদন্তী রাজনৈতিক ভাষা সৈনিক মরহুম শামসুল হকের সুযোগ্য পুত্র গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি মহোদয়ের সুপারিশ বাস্তবায়ন না করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ময়মনসিংহ অঞ্চল-৩ এর জিএম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন।
অনতিবিলম্বে খুঁটি স্থানান্তরের জন্য জিএম এর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এইজন্য কোন অনাকাঙ্খিত পরিবেশের সৃষ্টি হলে এর দায়ভার জিএমকেই বহন করতে হবে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া, গালাগাও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল বারেক বিএস.সি ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকুজ্জামান, চরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন অর রশিদ, চরপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও. শামসুল হক, বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা ও বিমান বাহিনী হতে অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার আলহাজ্ব আব্দুল সালাম সরকার, চরপাড়া ডাকঘরের পোষ্ট মাস্টার ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল মান্নান, বীর মু্িক্তযোদ্ধা চাঁন মিয়া ফকির, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাফেজ উদ্দিন তালুকদার, আওয়ামী লীগ নেতা ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ আশরাফ আলী, যুবলীগ নেতা সুলতান মাহমুদ, ভাষা সৈনিক শামসুল হক ক্লাবের সভাপতি ইমরান খান ও সাধারণ সম্পাদক সাধন সরকারসহ এলাকার শতাধিক লোক তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন-শেখ মুজিব কলেজটি আমাদের এলাকার অহংকার। এ কলেজের উন্নয়ন কাজ পল্লী বিদ্যুতের একটি খুঁটির জন্য আটকে গেছে। অনতিবিলম্বে খুঁটিটি অন্যত্র প্রতিস্থাপনের জন্য দাবী করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়েছেন।
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি’র সুপারিশ ও বোর্ড চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্যকারী দূর্নীতিবাজ ক্ষমতার অপব্যবহারকারী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর জিএম ও অনান্য দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য তারা দাবী করেছেন।
এ বিষয়ে জিএম এর সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Discussion about this post