ডেস্ক রিপোর্ট: শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ৫০ পুরানা পল্টন ঢাকা ১৪ দলের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সভাপতি এডভোকেট এস কে সিকদারের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সাবেক মহাসচিব মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খানকে জামায়াত শিবিরের সংশ্লিষ্ট সহ দলীয় সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ দল থেকে বহিষ্কার করেন, যাহা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত ও অনুমোদিত হয়।
উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসাইন খান, সহ-সভাপতি রাশিদুল আলম তর্কবাগীশ, মহাসচিব ড. নাসির উদ্দিন খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মোঃ সরওয়ার হোসাইন, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ ফিরোজ আলম সুমন, এম. আর. খান, উপদেষ্টা লায়ন আব্দুস সালাম চৌধুরী, হাজী সফু মিয়া সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রানা, দপ্তর সম্পাদক এ. কে আজাদ, মোখলেছুর রহমান সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
জানা যায় গত বছর কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খানের বিরুদ্ধে জামায়াত শিবিরের সংশ্লিষ্টতা ও তাঁর পরিবার ফ্রিডম পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার সংবাদ প্রকাশিত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে গণ আজাদী লীগ তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে উক্ত কমিটি সরজমিনে তদন্ত করে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা পেলে তাকে মহাসচিব পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন এবং তাঁর সকল কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষন করে গতকাল তাকে চুড়ান্ত ভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
জাতীয় দৈনিক কালের কন্ঠে ৪ অক্টোবর ২০১৯ প্রকাশিত সংবাদটি নিম্ন দেওয়া হলো…
“প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী বিতর্কিত আতাউল্লাহ”
বিতর্কিত নেতা আতাউল্লাহ খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারত সফরে যাওয়ায় কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী একজন ব্যক্তি কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হওয়ার সুযোগ পেলেন! পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আতাউল্লাহ খান কিভাবে ভারত সফরে গেলেন, তাঁরাও তা বুঝতে পারছেন না।
অনেকের ধারণা, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দল আজাদী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন।
আতাউল্লাহ খান কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপের বাসিন্দা। অভিযোগ আছে, বঙ্গবন্ধুর খুনি ডালিম ও ফারুক একসময় আতাউল্লাহ খানদের গ্রামের বাড়িতে আতিথেয়তা পেয়েছিলেন। তাঁর বাবা মহেশখালী ইউনিয়নের ঠাকুরতলা গ্রামের মৌলভী মকবুল আহমদ। আতাউল্লাহ খানসহ পাঁচ ভাই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। তাঁরা একসময় ফ্রিডম পার্টিও করতেন। মৌলভী মকবুল আহমদ ছিলেন মুসলিম লীগের স্থানীয় নেতা। ১৯৭৮ সালে তিনি জামায়াতে যোগ দেন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের এ রকম একজন সদস্য কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হলেন, তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘আতাউল্লাহ খান যে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন, সে বিষয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কেউ কিছু জানতেন না। ’
আতাউল্লাহ খান ওরফে আতা খান সম্পর্কে পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, রাজধানীর লালবাগে একসময় তিনি ছাত্রশিবিরের নেতা ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আতাউল্লাহ খানের ভাই শফিক উল্লাহ খান মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনে ফ্রিডম পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরের বছর আতাউল্লাহ খান ও তাঁর ভাই শফিক উল্লাহ খানের আমন্ত্রণে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে আসেন বঙ্গবন্ধুর খুনি মেজর ডালিম এবং কর্নেল ফারুক।
মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, ১৯৯৩ সালে মহেশখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে শিবিরের এক সভায় আতাউল্লাহ খান আওয়ামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছিলেন। এ ছাড়া পাঞ্জেরী শিল্পগোষ্ঠীর পরিবেশনায় আতাউল্লাহ খান রচিত একটি নাটিকায় মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও বীরাঙ্গণাদের নিয়ে কটূক্তি করা হয়।
মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এত দিন শুনেছি স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আমাদের দলে অনুপ্রবেশ করেছে। আর এখন দেখি জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা খোদ বঙ্গবন্ধু কন্যার সফরসঙ্গী হিসেবেই অনুপ্রবেশ করার সুযোগ পেয়েছে। আমাদের আর বলার কী থাকে!’
মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আতাউল্লাহ খান জামায়াত-শিবিরের শিল্পগোষ্ঠী পাঞ্জেরীর কেন্দ্রীয় পরিচালক। তিনি প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালান। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই আতাউল্লাহ খান রাতারাতি মুখোশ বদলে গায়ে মুজিব কোর্ট নিয়ে অতীতের কর্মকাণ্ড মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
Discussion about this post