মনিরুজ্জামান মনির, যশোর সদর উপজেলা প্রতিনিধিঃ
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের অনুযায়ি যশোরে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৮৮ জন এবং যশোর দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা অনুযায়ি যশোরে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ১৯ হাজার ৪শ ৪০ জন।
করোনা মহামারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের ঝরে পড়া বেড়েছে। কিন্তু যশোর জেলায় এই সংখ্যা আসলে কত তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ ঝরে যাওয়া শিক্ষার্থীর যে সংখ্যা বলছে তার ৭ গুন বেশি তথ্য দিয়েছে বেসরকারি সমাজ কল্যাণ সংস্থা দিসা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর অধীনে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য আউট অব চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম নামের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জেলার আট উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে এ প্রকল্পটি শুরু হয়। এ প্রকল্পের আওতায় যশোর জেলায় ৮ উপজেলায় ৬’শ প্রতিষ্ঠানে মধ্যে ৫৬৫টি শিখনকেন্দ্র চালু আছে। এখানে মোট শিক্ষার্থী ১৯ হাজার ৪শ ৪০ জন। উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০-৩০ জন শিক্ষার্থী এবং পৌরসভায় ২০-৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। পৌরসভার মধ্যে শিক্ষকদেও দুই শিপ্টে বেতন দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা এবং সুপার ভাইজারদের বেতন প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা। উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষকদের একশিপ্টে বেতন ৫হাজার এবং সুপারভাইজারদের বেতন দেওয়া হয় ১৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৩৫টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বন্ধ আছে।
দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা অফিস থেকে জানা যায়, ৩৫টি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের বেতন বন্ধ আছে। এখানে প্রতিটা শিক্ষার্থী উপবৃত্তির আওতা ভুক্ত। এখানে ভর্তির বয়স সীমা ৮-১৪ বছর।
যশোর দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থার নির্বাহি পরিচালক রাহিমা সুলতানা বলেন, ‘আমরা বর্তমানে ভালো আছি শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছি, ঘর ভাড়া দিতে পারছি। তবে এখনো শিশুদের উপবৃত্তি দিতে পারছিনা। যে ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে এ প্রতিষ্ঠান চালু এবং শিক্ষকদের বেতনের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছি। এ ৩৫ জন শিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে প্রতিষ্ঠান গুলো চালু করার চেষ্টা করছি। তবে এদের মধ্যে অনেকে চাকরী করতে চাই না।’
যশোর জেলা উপনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক সরোজ কুমার দাস বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে এই উপ আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর শিক্ষার্থীর সংখ্যা নিয়ে সারা বাংলাদেশে প্রত্যেকটা জেলাতেই একটা সমস্যা ছিলো। তিনি বলেন মাগুরা জেলাতেও এ সমস্যা ছিলো। প্রত্যেকটা জেলাতে এমন তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর দিয়েছে।
আমাদের কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা জরিপ চালায় এবং কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পাওয়া যায় যারা স্কুলে পড়ে এবং তাদেরকে বাদ দিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জরিপ থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী অনেক বেশি পায়। প্রতিটা জেলাতেয় এমন গড়মিল দেখা গেছে। যার ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পুনরায় আবার জরিপ করা হয়।
Discussion about this post