ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:- ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ আনন্দ মোহন কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের করোনার ক্রান্তিলগ্নে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাস শিক্ষার্থীদের মাঝে আলোরন তৈরি করেছে। বিপদকালীন সময়ে মানবিকতাবোধ জাগ্রত করছে বলে মন্তব্য অনেক শিক্ষার্থীর । স্ট্যাটাসের হুবুহু তুলে ধরা হলো….
“আমরা এখনও মানুষ হতে পারিনি”
বিসিএস- শিক্ষা ক্যাডারের সম্মানিত সৈয়দ জাফর স্যার কিছু দিন আগে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আমরা এখনএ মানুষ হতে পারিনি।
করোনা অনেক ক্ষেত্রে মানুষের প্রতি মানুষকে মানবিক করে তুলেছে। আমি একজন ভ্রমণ বিলাসী মানুষ, তাই কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেছি । অনেক দেশের মানুষের ধর্মকর্মের বালাই না থাকলেও তাদেরকে মনুষ্যত্ববোধে উজ্জীবিত দেখা যায় । কোথাও কোন কাজে আটকা পড়লে দৌড়ে এসে সহযোগিতা করে। ন্যায়পরায়ণতা,শৃঙ্খলাবোধ, পারস্পরিক সহযোগিতা তাদের মধ্যে দেখলে তখন মনে হয় এটাতো আমাদের মধ্যে থাকা উচিত ছিল । কারণ এগুলোতো আমাদের নবী রাসুলের শিক্ষা ছিল । একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের এগুলোতে এগিয়ে থাকার কথা ছিল।
আমরা জানি প্রভূভক্ত কুকুরের কথা । দেখি একটি কুকুরের মৃতদেহ গর্তে ফেলে চারিদিকে অন্য কুকুরদের মাটিফেলার দৃশ্য ।
একটি কাক মারা গেলে চারিদিকে অন্য কাকদের আর্তনাদ । এভাবে অনেক উদাহরণ আছে পশুপাখিদের প্রতি পারস্পরিক ভালবাসার । আর আমরা মানুষ হয়েও মানুষের প্রতি সামান্যতম সহানুভূতি দেখাতে পারিনা ।
করোনা হয়েছে মনে করে ছেলেরা মাকে জংগলে ফেলে যাওয়ার মতো অমানুষিকতা আর কি হতে পারে ।
করোনা হয়েছে মনে করে স্ত্রী সন্তানরা প্যারালাইসিস রোগীকে ঘরে রেখে পালিয়ে যাওয়া । এরকম অনেক ঘটনা মানুষ হিসেবে এবং আপনজন হিসেবে আমাদেরকে লজ্জিত করে ।
আবার এর বিপরীত চিত্রও দেখা যায়। বাপ ছেলের প্রতি, স্বামী স্ত্রীর প্রতি করোনার মুহূর্তে ভালবাসার পরাকাষ্ঠা।
অন্যদিকে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের ঐ সমস্ত অভাগাদের প্রতি পরম ভালবাসা । তারা দাফন কাফনসহ সকল কর্মাদি পরম মমতায় আপনজনের মতো করে থাকে । রাস্তার ধারে কাতরানো মানুষকে নিয়ে সেবা করা । প্রসূতি মহিলাদেরকে নিজেদের পরিবহনে বহন করে হাসপাতালে ভর্তি করা । পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর লোকজন নিজেদের কাঁধে ত্রাণের বস্তা নিয়ে অভাবিদের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে ।
তাই মনুষ্যত্ববোধ একেবারেই নেই তা বলা যাবে না ।আসুন আমরা মানবিকতা ও মনুষ্যত্ববোধে এগিয়ে আসি । আপনজনের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করি।
ঘরে থাকি, ঘরে থাকি, ঘরে থাকি।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাহিরের প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করি ।
করোনা থেকে নিজেরা বাঁচি, অন্যদেরকে বাঁচতে সহযোগিতা করি।
Discussion about this post