আরাফাত আলী,স্টাফ রিপোর্টার :
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার খানপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশেই অবস্থিত ডক্টর আনসার আলী হাসপাতাল । অনুমোদন-ডাক্তার-নার্স ছাড়াই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিকটির কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, কানাডা প্রবাসী ডক্টর আনসার আলী গত ২ বছর আগে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। এরপর থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই কার্যক্রম চালানো হচ্ছে এ ক্লিনিকে।
অনুসন্ধান জানাযায়, অনভিজ্ঞ কর্মকর্তা ও ডাক্তার,নার্স বিহীন চলছে ওই প্রতিষ্ঠান। অন্তঃসত্ত্বা রোগীদের সিজারের ও বিভিন্ন ধরনের অপারেশন পরে রোগীরা পড়েন ভোগান্তিতে।ওই ক্লিনিকের নামে রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। গত ২৫ এপ্রিল কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের মহেশকুড় গ্রামের আজমীর সাহাজীর স্ত্রী রিনা পারভীনকে আনসার আলী হাসপাতালে সিজার করানো হয়। অপারেশন করানোর ৩ দিন পরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন রিনা পারভীন। অবস্থার অবনতি দেখে তাকে রিলিজ দেন আনসার আলী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে রিনার পরিবার তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার আনিছুর রহমান রিনাকে আবার অপারেশন করেন।
এ বিষয়ে রিনা পারভীনের ভাবি সালমা পারভীন জানান, তার ননদকে গত মাসের ১৫ তারিখে সিজার করানো হয় আনসার আলী হাসপাতালে। সিজারের ৩ দিন পরে তার ননদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে তার ননদ রিনাকে আবার অপারেশন করাতে হয়। সিজার করার পরে পেটের ভেতরের রক্ত ভালোভাবে পরিষ্কার না করায় ৩০ হাজার টাকা খরচ করে তার ননদকে আবার অপারেশন করানো লেগেছে । আনসার আলী হাসপাতালে ভালো কোন ডাক্তার না থাকায় তারা ভোগান্তির শিকার হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঘটনার সত্যতা জানতে সরেজমিনে আনসার আলী ডক্টর আনসার আলী হাসপাতালে গেলে পুরো হাসপাতাল জন শূন্য দেখা যায়। এসময় কোন ডাক্তার, নার্স কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কারো দেখা পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে ডক্টর আনসার আলী হাসপাতালের পরিচালক ডক্টর আনসার আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ হাসপাতাল পরিচালনা তিনি করেননা। তার নাম ব্যবহার করছে হাসপাতালের এম ডি আমান উল্লাহ আল মারুফ। এছাড়া ডাক্তার নার্স স্থায়ীভাবে হাসপাতালে থাকেননা বলে তিনি স্বীকার করেন। তিনি আরো জানান সিজার অথবা কোন ধরনের অপারেশন করানোর প্রয়োজন হলে বাইরে থেকে ডাক্তার এসে করে দিয়ে চলে যায়। রিনা পারভীন নামে এক রোগীর অপারেশনের পরে সমাস্যা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ডক্টর আনসার আলী হাসপাতালের এম ডি আমান উল্লাহ আল মারুফ বলেন, তার হাসপাতালে সব কিছু সঠিক আছে নিয়ম মেনেই চলছে প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ডাক্তার ও নার্স সব সময় থাকেনা বলে স্বীকার করেন তিনি।
শ্যামনগর উপজেলা নিবার্হী অফিসার আকতার হোসেন জানান,তিনি অল্প কয়েক দিন আগে শ্যামনগর উপজেলায় যোগদান করেছেন। এজন্য ডাক্তার আনসার আলী হাসপাতাল সম্পর্কে তিনি অবগত নন। অনুমোদন ও ডাক্তার বিহীন যদি আনসার আলী হাসপাতাল পরিচালনা হয়। তাহলে অতিদ্রুত ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।
Discussion about this post