বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেছেন, বর্তমান অগণতান্ত্রিক অনির্বাচিত জনস্বার্থবিরোধী সরকারকে বিদায় করতে না পারলে, এই জাতি ও দেশকে একতাবদ্ধ করা যাবে না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম গতি পাবে না।
শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নিউ-ডিওএইচএস চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে কল্যাণ পার্টির ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জেনারেল ইবরাহিম বলেন, বিদেশি শক্তির উপর নির্ভর করে ক্ষমতায় টিকে থাকা এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে না পারলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা যাবে না। ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌত্ব অন্যদের হাতে জিম্মি হয়ে যাবে। তাই সকলের প্রতি আহবান আসুন এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে সকলে একতাবদ্ধ হই।
২০দলীয় জোটের এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৪ ডিসেম্বর ২০০৭ সালে। আমাদের একটি প্রতিশ্রুতি ছিল। আমাদের রাজনীতি হবে পরিবর্তনের জন্য। তাই আমাদের দলের মটো বা নীতিবাক্য হচ্ছে ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি’। আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যেই দল করেছিলাম এবং এখনও সেই লক্ষ্যই ধারণ করি।
তিনি বলেন, ২০০৭-০৮ সালে জনগণের মনে আশা জাগানিয়া একটি প্রতিশ্রুতি নিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছিল। কিন্তু দেশি-বিদেশি চাপ বা প্রলোভনের মুখে তারা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে অটল থাকতে পারেনি। তারা যে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে এবং ব্যর্থ হয়েছে, তার মাশুল জাতি গত ১২ বছর যাবত দিয়ে যাচ্ছে। বিগত ১২ বছরের চেষ্টায় বা অপচেষ্টায় বা অবহেলায় বর্তমান রাজনৈতিক সরকার বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করেছে। তারা দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ও দলীয়ভাবে প্রশ্রয় দিয়েছেন, দলীয় নেতাকর্মীদেরকে দুর্নীতির বরপুত্র করেছেন। বর্তমান সরকার ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ সালের নির্বাচনটিকে আগের রাতে হাইজ্যাক করার মাধ্যমে, দুর্নীতি ও অনৈতিকতার চূড়ান্ত উদাহরণ স্থাপন করেছেন।
দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্বের অধীনে একতাবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আজকের এই দিনে আমি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি এবং বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতি আবেদন করছি, এ জাতিকে পুনরায় একতাবদ্ধ করার সংগ্রামে যুক্ত হতে। বাংলাদেশের মানুষ গত ৪৯ বছর যাবত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে দেশ শাসন করতে দেখেছে, ক্ষমতার ভেতরে বা ক্ষমতার বাইরে বিভিন্ন নেতার রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমার বিশ্বাস, জনগণ নিশ্চয়ই পরীক্ষিত, প্রমাণিত ও দর্শনীয়ভাবে দুর্নীতিবাজ, অনৈতিক, অদক্ষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে পরিহার করবেন।
খালেদা জিয়া এবং বিএনপি প্রসঙ্গে ২০দলীয় জোটের এই নেতা বলেন, গত আট বছর যাবত বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক হিসেবে রাজনৈতিক ময়দানে চলমান। সেই ২০ দলীয় জোটের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দিন পার করছেন। আমি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান জানাচ্ছি, তার সুচিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট আবেদন জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জাগপার ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদ প্রধান। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শুভেচ্ছা জানান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল অব. অলি আহমেদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কল্যাণ পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য ফোরকান ইবরাহিম, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নুরুল কবির ভূইয়া পিন্টু, সহসভাপতি শাহিদুর রহমান তামান্না প্রমুখ।
Discussion about this post