নিলয়, স্পোর্টস ডেস্ক:
নাজমুল হোসেন শান্ত বাংলার ক্রিকেটের অটোমেটিক চয়েজ। প্রতিপক্ষের বিপক্ষে যখন মাঠে নামে লাল সবুজ প্রতিনিধিরা তাদের আবার লিড দেন তিনি। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের গুরুদায়িত্ব এখন একাই সামলান শান্ত। দেশের সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে বিসিবি কর্তারা সবাই শান্তকে আগলে রাখেন নিজের ছোট ভাই, সন্তানের মতই। জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে কনসিসটেন্স পারফর্মার না হয়েও তিন ফরম্যাটের লিডিং রোলে নিজেকে বসিয়েছেন বাঁহাতি এ ব্যাটার। যার পিছনে রয়েছে শুধুমাত্র তার ক্রিকেটীয় প্রতিভা। মাঝে মধ্যে ব্যাট হাতে প্রতিভা ফুটে উঠলেও গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ কিংবা টুর্নামেন্টে নিষ্প্রভ থাকে তার ব্যাট। ওয়ানডে এবং টেস্ট ক্রিকেটে কোন ভাবে শান্তকে চালিয়ে নিলেও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেমানান এক সময়ে লর্ড খ্যাত এ ক্রিকেটার। বিশেষ করে তার ব্যাটিং স্ট্রাইকরেটের জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে শান্তর টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স প্রশ্ন তোলে তার জাতীয় দলে থাকা নিয়ে, যেখানে তিনি দেশকে নেতৃত্ব দিবেন আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও। এ যেনো জীবনানন্দ দাসের কবিতার মতই অদ্ভুত উটের পিঠে ছড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর প্রিয় ছাত্র এমনকি সাবেক নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর ও পছন্দের শীর্ষে থাকতেন নাজমুল হোসেন শান্ত। যা দিয়েই দলে টিকে গেছেন তিনি। দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যাটিং নামা এ ক্রিকেটার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলেন ২০১৯ সালে। চট্টগ্রামে অভিষেক হওয়া শান্ত এখন পর্যন্ত লাল সবুজকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ৩২ ম্যাচে। ৩১ ইনিংস ব্যাটিংয়ে সুযোগ পেয়ে দেশকে উপহার দিয়েছেন ৬৯৭ রান, ব্যাটিং গড় মাত্র ২৬.৮১। ক্রিকেটের এ ছোট্ট সংস্করণে ৪টি অর্ধশতকের পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৭১ রানের একটি ইনিংস রয়েছে বাঁহাতি এ ব্যাটারের। শান্তর এসব পারফরম্যান্স শুধুমাত্র একটি পরিসং্খ্যান। ৬৯৭ রান করতে সমপরিমাণ বলও খেয়েছেন এ ব্যাটার। আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সাথে যা বেমানান। জাতীয় দলে শান্তর স্ট্রাইকরেট মাত্র ১১১.১৬ যা বর্তমান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দলের জন্য বিপদজনক। সবশেষ চট্টগ্রামে দুর্বল প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেছেন ২৪ বলে ২১ রান যার মধ্যে অর্ধেক খেলেছেন ডটবল।
শান্তর এমন বাজে ব্যাটিং প্রভাব ফেলে অন্য ব্যাটারদের উপরও। সামগ্রিক ভাবে যেটি বর্তায় দলের জয়-পরাজয়ে। তিনে নামা একজন ব্যাটসম্যান সব সময় দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস বয়ে আনবেন এমন প্রত্যাশা সকলের। তবে প্রত্যাশার ভার শান্ত ফিরিয়ে দেন এক একটা ডট বল খেলে। যার ফলে অপর প্রান্তে থাকা ব্যাটারদের খেলতে হয় বড় শর্টস, যা দলের জন্য হয়ে উঠে ঝুঁকিপূর্ণ। যদি ব্যাট হাতে শান্ত এমন পারফরম্যান্স উপহার দিবেন তাহলে প্রশ্ন উঠে দলে তার দায়িত্ব নিয়ে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই এমন ব্যাটিং করে আসছেন শান্ত। সে শান্তকেই তিন ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব দেওয়া বিসিবির ভুল সিদ্ধান্ত হিসেবেই বিবেচিত দেশের কোটি ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে। হয়ত আমেরিকায় অনুষ্ঠিত আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও এর প্রভাব উপভোগ করতে হবে ভক্তদের।
Discussion about this post