আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বেচাকেনার সময় বিরল প্রজাতির প্রাণী তক্ষক উদ্ধার করেছে পুলিশ। লোকমুখের বরাত দিয়ে পুলিশ আরও জানিয়েছে, প্রাণীটির কথিত মূল্য শত কোটি টাকা।
এ ঘটনায় আলফাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। জিডি নম্বর ২৬৪। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের তিতুরকান্দি গ্রামে একটি তক্ষক বেচাকেনা হওয়ার খবর শুনে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) দুপুরে উপপরিদর্শক (এসআই) কাদের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। এসময় জড়িতরা তক্ষকটি একটি ব্যাগে ভরে সেটি একটি গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা ব্যাগটি রেখে পালিয়ে যান। এসময় তক্ষকসহ ব্যাগটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন এসআই কাদের। উদ্ধার হওয়া তক্ষকটি প্রায় ১৩ ইঞ্চি লস্বা। লােকমুখের বরাতে প্রাণীটির কথিত মূল্য শত কোটি টাকা বলে সাংবাদিকদের জানান পুলিশ।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, প্রাণীটি উদ্ধারের পর উপজেলা বন কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বনে অবমুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুরের বন কর্মকর্তা শেখ লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তক্ষক গিরগিটি প্রজাতির নির্বিষ নিরীহ বন্যপ্রাণী। সাধারণত পুরাতন বাড়ির ইটের দেয়াল, ফাঁক-ফোকর ও বয়স্ক গাছে এরা বাস করে। এরা কীটপতঙ্গ, টিকটিকি, ছোট পাখি ও ছোট সাপের বাচ্চা খায়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকা অনুযায়ী এটি একটি বিপন্ন বন্যপ্রাণী।’
এর কথিত মূল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তক্ষক দিয়ে ক্যান্সারের মূল্যবান ওষুধ তৈরি হয়, তক্ষক ঘরে থাকলে লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা আসে, প্রতিবেশী দেশে এর ব্যাপক চাহিদা, মাথার ম্যাগনেটের দাম কোটি টাকা—এমন গুজবের ওপর ভর করে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে দেশজুড়ে কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র এখন তক্ষকের পিছু ছুটছে। আমার জানামতে আদৌও এর মূল্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে গুজবের কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে বিরল প্রজাতির এই প্রাণীটি।’
Discussion about this post