যশোর জেলা প্রতিনিধি, মনিরুজ্জামান মনির :
যশোরের বাজারে মাছ-মাংস ও ডিমের দাম কমেছে। আবার সবজির দামও কম। ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের মনে স্ব¯ি’ মিলেছে। গরুর মাংসের দাম ছিল প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা। যাহা বর্তমান বাজারে বিক্রি হ”েছ সাড়ে ৬’শ টাকার কমে। এদিকে গরুর মাংসের সাথে যশোরের বাজারে দাম কমেছে মাছ ও ব্রয়লার মুরগি এবং ডিমের দামও। আবার সবজির দামও কমেছে। সবজির বাজার কয়েক সপ্তাহ আগে দাম ছিল আগুন।
মুরগির দাম কমার সাথে ডিমের দামও কমেছে। ব্রয়লার মুরগির ডিম ভারত থেকে আমদানি করায় এ দাম কমেছে বলে মনে করেন ক্রেতা ও ব্যবসায়িরা। যশোরে বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে ডিম বিক্রি হ”েছ। গত ৫ নভেম্বর ভারত থেকে ডিমের আমদানি হয় ৬১ হাজার ৯৫০ পিস ডিম। ভারতের ডিম দেশে আসার ফলে ডিমের দাম ডজনে ৩৫ টাকা কমেছে।
যশোরের বাজার ঘুরে দেখা যায়, সাড়ে ৬’শ টাকার নিচেইও গরুর মাংস বিক্রি হ”েছ। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭০ টাকা এবং সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৭০ টাকা বিক্রি হ”েছ। কিš‘ ব্রয়লারের দাম ছিলো ২’শ ৬০ থেকে ২’শ ৮০ টাকা। এদিকে ১ ডজন লাল ডিম পাওয়া যা”েছ ১০৮ থেকে ১২০ টাকায়। আর সাদা রঙের ডিম ৯৬ থেকে ১’শ ৮ টাকায় পাওয়া যা”েছ। আবার সপ্তাহের ব্যবধানে তেলাপিয়া, পাঙাশ, রুই, কই ও শিং মাছের দামও কেজি প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। মাঝারি ও ছোট আকারের তেলাপিয়া ও পাঙাশ বিক্রি হ”েছ ১’শ ২০ থেকে ১’শ ৪০ টাকায়। পাঙাশ ১’শ ৬০ টাকায়ও বিক্রি হ”েছ। চাষের কই ১’শ ৭০ থেকে ২’শ টাকা দামে প্রতি কেজি বিক্রি হ”েছ। শিং মাছ ৩’শ ৫০ টাকায় কেজিতে নেমে এসেছে এবং আকারে বড় হলে ৪’শ টাকা। চাষের রুইয়ের কেজি পড়ছে ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা। সবজির দামও কমেছে। ফুলকপি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ থেকে ৩০ টাকা, সিম ২৫ থেকে ৩০ টাকা, লালশাক ৫ থেকে ৮ টাকা, পালংশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, টমেটো ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ও মূলা ৮ থেকে ১২ টাকা কেজি পাইকারি বিক্রি হ”েছ। শাক-সবজির দাম কমেছে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা।
যশোর কাঠের ব্রিজের মাংস ব্যবসায়ি খোকন জানান, গরুর মাংস বিক্রি হ”েছ প্রতি কেজি ৬’শ ৫০ টাকা। কিš‘ ৩ মাস আগে এ মাংস বিক্রি করছি ৭’শ ৫০ টাকা কেজি।
যশোর বড় বাজারের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার জানান, ডর্জনে ডিমের দাম ৩০-৪০ টাকা কমেছে। সব কিছু দাম কমার পরে চাহিদা বাড়ে। তারপরও এ সময় মুরগিতে ডিম বেশি দেয়। আবার ভারত থেকেও ডিম আসছে। বাজারে মাংসের দামও কম এবং শীতের সবজির পরিমাণও বেশি বেড়ে যাওয়ায় ডিমের ওপর চাপ কমে গেছে।
যশোর বড় বাজারের মাছ ব্যবসায়ি শহিদুল ইসলাম জানান, মাছ এ মাসে আামদানি বেশি হয়। আবার চাহিদাও কম থাকে। বাজারে সব মাছের দাম কম। আরো কমতে পারে।
খাজুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা তপন জানান, বেচাকেনা আগের তুলনায় অনেক কম। মাছের দাম কেজি প্রতি ২০-৩০ টাকা কমেছে। আগের তুলনায় বাজারে মাছের চাপ বেশি। আবার মাংসের দাম কম হওয়ায় মাছের বাজারেও প্রভাব পড়েছে। এ কারণে মাছ কম দামেই ছাড়তে হ”েছ। তবে মাছের দাম কম থাকায় ক্রেতাদের চাপ বেশি।
সবজি ব্যবসায়ি নির্মল শাহা জানান, বর্তমানে শাক- সবজির দাম অনেক কম। ১ মাস আগে এ সবজির দাম খুব বেশি ছিল।
ক্রেতা শাহাজান শেখ জানান, বাজারে ডিম, মাংস, মাছ ও সবজির দাম কমায় কিনে খেতে পারছি। বহুদিন ধরে গরু-ছাগলের মাংস কিনে খেতে পারি না। বছরে কুরবানির সময় একটু খাওয়া যায়। বাজারে সব জিনিসের দাম অনেক বেশি। বর্তমানে রিক্সা চালিয়ে পরিবার চালানো কঠিন। আমাদের মতো গরিবের ডিম আর মাছ খাওয়া ছাড়া কিছুই নেই। সেটাও কয়েক দিন আগে যে পরিমাণ দাম বাড়ছিল। তাতে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করা ছাড়া উপায় ছিলো না। এখন বাজারে ডিম-মাছের দাম অনেক কমেছে।
যশোর রেল গেটের ক্রেতা মানিক সরকার জানান, সবজি থেকে শুরু করে মাছ ও মাংসের দাম কমেছে। কয়েক দিন আগে তো সবজি মাছ কেনার মত ছিল না। এরপর ডিমের দামও ভালোই কমেছে। এভাবে কম থাকলে সাধারণ মানুষ বাঁচতে পারবে। সবজির দাম কমেছে কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আগের থেকে স্বস্তিতে বাজার করা যাচ্ছে।
Discussion about this post