এমরান হোসেন তানিম, পাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না ইয়াসমিন দুর্ঘটনায় ডান পা হারান দুই বছর বয়সে। ১৭ বছর ব্যবহার করেন কৃত্রিম পা।সংক্রামনের ফলে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে করা হয় অপারেশন,দরকার পড়ে বিশেষ কৃত্রিম পা।এই মেধাবী শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে পাশে দাড়ালেন পাবিপ্রবি প্রশাসন।
তামান্না ইয়াসমিন ২০০৩ সালে দুর্ঘটনা ডান পা কেটে পেলতে হয়। তিন বছর বয়স থেকে প্লাস্টিকের পা ব্যবহার করা শুরু করেন। দীর্ঘ ১৭ বছর কৃত্রিম পা ব্যবহার করার ফলে পায়ে সংক্রামন দেখা দিলে ২০২১ সালের অক্টোবরে অপারেশন করানো হয়। অপারেশন করার পর পায়ের আকৃতি পরিবর্তন হওয়ার কারনে দরকার পড়ে বিশেষ কৃত্রিম পা তৈরির। এর আগে তিনি ঢাকা পুঙ্গ হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে কৃত্রিম পা সংগ্রহ করতেন।দুভাগ্যক্রমে করোনা মহামারীর ফলে বিনামূল্যে কৃত্রিম পা বিতরন বন্ধ হয়ে যায়।তাই বিশেষ কৃত্রিম পা তৈরির দরকার পড়ে। এই খরচ বহন করা তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব না। এই মেধাবীকে আর্থিক সাহায্যে দিতে এগিয়ে আসেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।শুক্রবার (২৬ আগস্ট) মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি (এমপি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেক তুলে দেন তামান্না ইয়াসমিনের হাতে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা ড.সমীরণ কুমার সাহা জানান,দরখাস্ত হাতে পাওয়ার পরে আমি বিষয়টা নিয়ে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে কথা বলি।ওনার পরামর্শে আমি “brac limb and brace fitting center” এর সাথে কৃত্রিম পা তৈরির ব্যপারে কথা বলি। ওনারা বর্তমান পায়ের গঠন অনুযায়ী নতুন পা তৈরিতে ৯৩২০০ টাকা খরচ পড়বে জানায়।তার পর উপাচার্য মহোদয়ের সাথে বিষয়টি উপস্থাপন করি।তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ড থেকে এই আর্থিক সহায়তা দিতে বলেন।
অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে তামান্না ইয়াসমিন আজ সমাচারকে জানান, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে পায়ের অপারেশন করার কারনে আমার পায়ের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে যায়।ডাক্তার বলে বিশেষ কৃত্রিম পা তৈরি করতে হবে।আমার পরিবারের পক্ষে তা বহন করা সম্ভব না।আমার ব্যাচমেট বান্ধবী রত্না খাতুন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাপস কুন্ড ভাই আমাকে অনেক সাহায্য করে। আমি তো পা নিয়ে কোথাও যেতে পারি না।ওনারা আমার বিভাগের চেয়ারম্যান স্যারকে বিষয়টি অবহিত করে আমার দরখাস্ত নিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা সমীরন কুমার সাহা স্যারের কাছে যায়।সমীরণ কুমার সাহা স্যার আমাকে অনেক সাহায্য করে। দরখাস্ত জমা দেওয়ার দেড় মাস পরে স্যার এটা অনুমোদন হয় জানান। আর আজকে আমি তার চেক (১লক্ষ টাকার) হাতে পেয়েছি।আমি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানায়। আমার এই দুঃসময়ে থাকা সকলকে ধন্যবাদ জানায়।সংক্রামের কারনে আমি অনেক দিন ক্লাস করতে পারি নি এ অবস্থায় আমার বিভাগের চেয়ারম্যান স্যার ও সকল শিক্ষকমন্ডলী আমাকে সাহায্য করেছেন।এই দুঃসময়ে আমি যাদেরকে কাছে পেয়েছি সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
তামান্না ইয়াসমিনের মা অনুভুতি প্রকাশ করে বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ আমাদেরকে সহযোগীতা করার জন্য। সকলের কাছে আমার মেয়ের জন্য দোয়া চাই।
Discussion about this post