সাব্বির আহাম্মেদ, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
করোনাভাইরাসের সংক্রমন প্রতিরোধ করার জন্য ২২ জুন ভোর ৬টা থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার আশেপাশে ৭টি জেলায় সর্বাত্মক কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। যার মধ্যে অন্যতম জেলা হলো শিল্প নগরী নারায়ণগঞ্জ। শিল্প সমৃদ্ধ হওয়ায় এই জেলায় জন সমাগম অন্যান্য জেলা শহর গুলো থেকে একটু বেশিই ব্যস্ত এই নগরী। কিন্তু ব্যস্ত এই নগরী লকডাউনের প্রথম দিনের ন্যায় দ্বিতীয় দিন ছিল অনেকটা নীরবতা। তবে তার মধ্যেও নানা অজুহাতে লোকজন বাসা থেকে বের হয়েছে। কোনভাবেই থামানো যায়নি জনস্রোত। ফলে তাদের সামাল দিতে বেশ কাঠখোড় পোহাতে হয়েছে প্রশাসনকে।
নগরীতে লকডাউন থাকায় প্রথমদিনের ন্যায় দ্বিতীয় দিনও ছিলনা সাধারণ মানুষের কর্মব্যস্ততা। নারায়ণগঞ্জ থেকে বন্ধ ছিল সকল প্রকার গণপরিবহন। খোলা হয়নি কোন শপিংমল, মার্কেট বিপনী বিতান। শহরের হোটেল রেস্তোরা গুলোও খোলা ছিল সীমিত আকারে।
সরেজমিনে শহরের চাষাঢ়া থেকে বঙ্গবন্ধু সড়ক হয়ে ২নং রেলগেইট, ১নং রেলগেইট, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট, কালীরবাজার ফ্রেন্ডস মার্কেট, চারারগোপ সহ শহরের গুরুত্বপূর্ন এলাকা ঘুরে কঠোর লকডাউনের দৃশ্য দেখা গেছে।
শহরের চাষাঢ়া এলাকায় সমবায় মার্কেট, শান্তনা মার্কেট, মার্ক টাওয়ার, হক প্লাজা, সায়াম প্লাজা সহ কোন মার্কেটের দোকান খুলতে দেখায় যায়নি। খোলা হয়নি শহরের বৃহত্তর খুচরা কাপড়ের বিপনী কেন্দ্র ফ্রেন্ডস মার্কেট। প্রতিদিন অবৈধ হকারদের দখলে থাকা নগরীর ফুটপাত গুলোতে ছিলনা কোন হকার। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সারিবদ্ধ ভাবে দাড়িয়ে ছিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী সকল কোম্পানির গণপরিবহন।
নারায়ণগঞ্জে সকাল থেকে চলমান লকডাউনে কঠোরতা থাকলেও বিকেলের পর থেকে একেবারেই ঢিলেঢালা চলে লকডাউন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়াও বিকেলে দেখা গেছে অনেককে লকডাউন উপভোগ করতে বের হতে।
সর্বত্র কঠোর লকডাউন পালিত হলেও লকডাউনের আওতা মুক্ত রয়েছে দেশের রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠান। গার্মেন্টস শ্রমিকদের নদী পারাপারের জন্য সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাটে ট্রলার চলাচল করলেও সকাল ১০টার পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় ট্রলার চলাচল। সেই সাথে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় যাত্রী পারাপারের নৌকাও। পরবর্তীতে সাধারণ যাত্রীদের চাপের মুখে নৌকা চলাচল শুরু হয়।
নগরীতে পন্যবাহী ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানচলাচল করলেও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সড়কে তেমন চাপ ছিল না। ফলে শহরের গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট ২নং রেলগেইট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশকে অনেকটাই স্বস্তিতে সময় পাড় করতে দেখা গেছে। অপরদিকে চাষাঢ়া এলাকায় প্রতিদিনের মতই ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের।এদিকে শহরের শপিংমল মার্কেটগুলো বন্ধ থাকলেও দোকান খুলতে দেখা গেছে কালীরবাজার রেলওয়ে মার্কেটের দোকান মালিকদের। এছাড়াও শহরের ২নং রেলগেইট এলাকায় রেললাইনের পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠা ফলের দোকান গুলোও খোলা রাখতে দেখা গেছে। তবে নগরীতে সাধারণ মানুষের চলাচল ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম।
Discussion about this post