মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরে স্বামির সাথে মোবাইলে কথা বলতে বলতে খাদিজা বেগম-(২২) নামের এক গৃহবধু গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গৃহিণীর স্বামি মোঃ হাসান খান বড়িতে স্ত্রী ও ২ বছরের কন্যা সন্তান রেখে তিনি ঢাকায় থাকেন। বিয়ের সময় বড়কে যৌতুক দিলেও পড়ক্ষনে আরো যৌতুকের জন্য নিজেদের পরিবারের মধ্যে ঝগড়া চলে আসছিলো। গতকাল রাতে ফোনে যৌতুকের জন্য চাপ দিলে ও বিভিন্ন রকম অশোভন কথা বলার জন্য খাদিজা বেগম আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি মেয়ের পরিবারের। এ ঘটনার পর থেকেই ওই গৃবধুর শশুড়বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। এদিকে আজ শুক্রবার সকালে পুলিশ নিহত গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করেছেন।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সুত্রে জানগেছে, উপজেলার সিডি খান এলাকার নতুন চরদৌলত খান গ্রামের অসহায় কৃষক কামাল বেপারীর মেয়ে খাদিজা বেগমের সাথে একই গ্রামের মোনাব্বর খানের ছেলে মোঃ হাসান খানের প্রায় ৪ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বামীকে স্বর্ণালঙ্কারসহ নদগ অর্থ প্রদান করেন ওই গৃহবধুর পরিবার। বিয়ের পরে তাদের সংসারে ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এদিকে ওই গৃহবধুকে বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় পূনরায় যৌতুকের জন্য তার বাবার কাছ থেকে টাকা নেয়ার জন্য স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন মানুষিক ও শারিরিকভাবে নির্যাতন করে আসছে।
এ নির্যাতন সইতে না পেরে গত কয়েক দিন পূর্বে ওই গৃহবধু তার বাবার বাড়িতে আসেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই গৃহবধুর স্বামী হাসান খান তাকে মোবাইল ফোনে তার দাবীকৃত যৌতুকের টাকা নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসতে বলেন। এ নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর সাথে ফোনে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে নিজের জীবন দিয়ে অবশেষে যৌতুকের বলি হয় গৃহবধু খাদিজা বেগম। তবে ঘটনার পর থেকেই নিহত গৃহবধুর স্বামী হাসান ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন। খবর পেয়ে কালকিনি থানার এসআই রাজিব চন্দ্র সাহা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে নিহত গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরন কনেছেন।
নিহত গৃহবধুর পিতা কামাল বেপারী বলেন, বিয়ের সময় আমার মেয়ের স্বামীকে স্বর্ণালঙ্কারসহ নদগ টাকা দিয়েছি। সে এখন পূনরায় টাকা দাবী করতেছে। আমি গরীব মানুষ টাকা কোথার থেকে দিব। এ দাবীকৃত টাকা নিয়ে ফোনে আমার মেয়ে ও জামাই ঝগড়া করেন। এর জের ধরে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার মেয়েকে টাকার জন্য তার স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন মানুষিক ও শারিরিকভাবে নির্যাতন করতেন। তাই আমি জামাইসহ তার পরিবারের নামে মামলা করবো।
এব্যাপারে কালকিনি থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ নাসিরউদ্দিন বলেন, আমরা খবর পেয়ে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে প্রেরন করেছি। তবে নিহতের পরিবার মামলা করলে মামলা নেয়া হবে।
Discussion about this post