মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
অবৈধ ভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুইগ্রামের কৃষি জমি ও বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার। অবৈধ ডেজার ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় জমির মালিকরা অসহায়। এরআগে প্রশাসন একাধিকবার অভিযান চালিয়ে এভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করলেও সম্প্রতি আবার ৬টি ড্রেজার স্থাপন করে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগী কৃষি জমির মালিকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
এতে অভিযোগ করা হয়,সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর ও ঘাটিয়ারা এলাকার কৃষি জমি এবং পুকুর থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে আসছে প্রভাবশালী একটি চক্র। এই চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঘাটিয়ারা গ্রামের নুরু মীরের তিন ছেলে মইনুল মীর ওরফে মনির মিয়া, দেলোয়ার মিয়া ও কামাল মীর। এই তিন ভাইয়ের সাথে রয়েছেন চিনাইর ও চাপুইর এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে আশপাশের বাড়িঘর, কৃষি জমি ও পুকুরের হুমকির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি ভাঙন দেখা দিয়েছে পুকুরের পাড়। এছাড়াও হুমকির মুখে পড়েছে সিলেট থেকে চট্রগ্রামের দিকে যাওয়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের বড় টাওয়ার।
এসব বিষয় উল্লেখ করে এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রামবাসী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে এসব ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন বন্ধ করে প্রশাসন৷ কিন্তু সম্প্রতি একই চক্র পুকুর ও জমিতে ড্রেজার স্থাপন করে বালু উত্তোলন শুরু করেছে। এতে করে পুনরায় আশপাশের কৃষি জমি, পুকুর, বাড়িঘর ও জাতীয় গ্রিডের বৈদ্যুতিক টাওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে। অভিযোগকারীদের একজন খলিলুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ ৫ বছর যাবত মনির মিয়ার গংয়ের নেতৃত্বে অবাদে কৃষি জমি ও পুকুর থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তারা ড্রেজারের মাধ্যমে তলদেশ দিয়ে আমাদের পুকুর ও জমি থেকে মাটি নিয়ে যাচ্ছে। এতে ভাঙনের মুখে পড়েছে পুকুর পাড়, পুকুরের গভীরতা হয়ে গেছে ৭০/৮০ ফুটের। প্রশাসন থেকে অভিযান চালিয়ে ড্রেজার গুলো পানিতে ফেলে দিয়ে যায়। প্রশাসনের লোকজন যাওয়ার পর তারা পানি থেকে ড্রেজার গুলো তুলে ফেলে।’ আরেক ভুক্তভোগী অভিযোগকারী ছোবা মিয়া বলেন, ‘আমার কাছে পুকুর সাড়ে ১২ লাখ টাকায় ইজারা দিয়েছে মনির। কিন্তু টাকা নেওয়ার দীর্ঘদিনেও পুকুর বুঝিয়ে দেয়নি। উপরন্তু তারা পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করে ৭০/৮০ ফুট গভীর করে দিয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সিপন জানান, ‘দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজারের মাধ্যমে তারা বালু উত্তোলন করে আসছে। প্রভাবশালী হওয়ায় তারা কারো বাধা শুনেন না। এতে করে বাড়িঘর, কৃষি জমি ও জাতীয় গ্রিডের বৈদ্যুতিক টাওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা চাই এই বৈধ বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ বন্ধ করা হোক।’
এই বিষয়ে অভিযুক্তদের কামাল মীর বলেন, আমরা আমার ভাইয়ের পুকুর থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছি৷ তাকে অন্যদের কেন সমস্যা হবে?
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, ‘এর আগেও ওই এলাকায় দুইবার অভিযান চালিয়ে অবৈধ ড্রেজার গুলো বন্ধ করে দিয়েছি। ড্রেজার গুলো পানিতে ফেলে দিয়েছি, ধ্বংস করেছি। তারা যদি পুনরায় ড্রেজার স্থাপন করে থাকে আবারও অভিযান চালানো হবে।’
Discussion about this post