মোঃ নিয়ামুল ইসলাম আকঞ্জি,ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের তনয় শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকীতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য র. আ. ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তিনি আওয়ামীলীগ মনোনীত বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, জেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দকে তিরস্কারও করেন। সে সাথে নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনকে সাথে নিয়ে শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করলেও জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের সাথে পুষ্পস্তবক অর্পন অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। সকাল ১০টায় শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুরস্কার প্রদান করে। এসময় জেলা আওয়ামীলীগ এর আড়ম্বর পূর্ন কর্মসূচী না থাকায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এক পর্যায়ে স্টেডিয়াম চত্বর ছেড়ে যেতে চান। তখন জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার তাঁকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করলে তাদের দুজনের মধ্যে প্রকাশ্যে মতভেদ হয়। পরে অবশ্য আল মামুন সরকার শারীরিক অসুস্থতার কারণে আলোচনা সভায় যোগ দিতে পারেন নি।
স্টেডিয়াম মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামাল ছিলেন একজন বহুগুণে গুনান্নিত ব্যক্তি। মুক্তিযুদ্ধ, ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার অবদান ছিল অবিষ্মরণীয়। তিনি ছিলেন কর্মী বান্ধব একজন নেতা। তার জন্মদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে আড়ম্বর আয়োজন না থাকাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। শুধু তাই নয় যারা আওয়ামীলীগ মনোনীত জনপ্রতিনিধি তাদের পক্ষ থেকেও তেমন আয়োজন চোখে পড়েনি। শহরে হাতে গুণা কয়েকটি প্লেকার্ড ছাড়া আর কিছুই নজরে আসেনি। জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হিসেবে আমি লজ্জিত। ধিক জানাই আমি নিজেকে এবং দলের নেতাকর্মীকে যারা আওয়ামীলীগের পরিচয় দিয়ে চলি। আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত, যে শেখ কামালের জন্মবার্ষিকীতে আমাদের পক্ষ থেকে তেমন কোন প্লেকার্ড, ফেস্টুন বা অনাড়ম্বর আয়োজন নেই। আমাদের জেলা আওয়ামীলীগ, উপজেলা আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ কারো কি মনে পড়ল না যে, আমরা শেখ কামালের একটি ছবি দিয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানাই। বিষয়টি যে আমারো মনে পড়ে নাই সেজন্য আজ আমি নিজেকে ধিক্কার জানাচ্ছি। আমি নিজেকে ঘৃণিত মনে করছি। কারণ আমি তো এখনো শেখ কামাল, শেখ মুজিবের নাম বিক্রী করে খাই। আমার দেহ যে হৃষ্টপুষ্ট, তাদের নাম বিক্রি করেই তো আমার দেহ হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে। তিনি শেখ কামাল গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার ঘটনায় বলেন, সেদিন যারা শেখ কামালকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছিল তারা আজ বর্তমান মন্ত্রী পরিষদে আসীন।
তিনি ক্ষোভের সুরে আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে আমরা ব্যবহার করি, যতটুকু প্রয়োজন আমাদের বিত্ত, বৈভব, পদ-পদবী বাড়ানোর জন্য যা যা প্রয়োজন সেটার জন্য আমরা করি। পরে তিনি স্বার্থের রাজনীতির উর্ধ্বে এসে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধু ও শেখ কামালের আদর্শকে ধারণ করে জনকল্যানে কাজ করে যেতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহŸান জানান। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিও, প্রেসক্লাব সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামি প্রমুখ।
Discussion about this post