মনিরুজ্জামান মনির,যশোর সদর প্রতিনিধি :
শব্দ যখন তার মানমাত্রা অতিক্রম করে তখন সেটিকে শব্দ দূষণ হিসাবে ধরা হয়। শব্দ দূষণ মারাত্মক পরিবেশগত সমস্যা। শব্দ দূষণের কারণে আগামী প্রজন্ম মানসিক ও শারীরিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শব্দ দূষণের ফলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, বধিরতা, হৃদরোগ, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘ্নিত, ঘুমের ব্যাঘাতসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের আওতায় শব্দ দূষণ বিধিমালা ২০০৬ বলবৎ আছে । তারপরও শব্দ দূষণের মাত্রা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। শব্দের উৎপত্তিস্থলে শব্দের মাত্রা বেশিই থাকে। শব্দ পরিমাপের একক হলো ডেসিবেল যা একটি লগারিদম একক।বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনা দিবস পালিত হচ্ছে। জনগণের কল্যাণ ও স্বাস্থ্যের উপর শব্দসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে আমেরিকান সেন্টার ফর হিয়ারিং এন্ড কমিউনিকেশন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থা প্রতি বছরের এপ্রিল মাসের শেষ বুধবার দিবসটি পালন করে আসছে। সে অনুযায়ী এ বছরও ২৬ এপ্রিল পালিত হয়েছে ২৮ তম আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনা দিবস।
সুরক্ষিত শ্রবণ এবং সুরক্ষিত জীবন এই স্লোগান নিয়ে যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরে আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালি হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায়’ এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন যশোর মডেল মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাও. মইনুদ্দিন।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ অধিদপ্তর উপপরিচালক নুর আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন যশোর জেলার সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমরা যদি প্রত্যেকে যার যার স্থান থেকে সচেতন হয়ে থাকি। তাহলে শব্দ দুষণ মুক্ত করা সম্ভাব। কোন প্রতিষ্ঠানের একার পক্ষে সম্ভাব নয়। যেমন আমরা করোনা ভাইরাসের সময় সাধারণ মানুষকে কোন ভাবে সচেতন করা সম্ভাব হচ্ছিলো না। তখনি আমাদের ইসলামী ফাউন্ডেশনের সাহায্য নিতে হয় এবং প্রতিটা মসজিদের ইমামের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা হয়। মানুষ ইমামের কথা মত সচেতনও হয়ে ছিলো। তিনি বলেন এমনি ভাবে মসজিদের ইমামদের মধ্য দিয়ে এই শব্দ সচেতন করতে হবে। প্রতিটা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে এ সচেতন করতে হবে। আবার পথে চলার সময় কোন গাড়ির ড্রাইবার অতিমাত্রায় হর্ন বাজালে আমরা তাৎক্ষনিক ৯৯৯ ফোন দিয়ে অভিযোগ করতে হবে। তাহলে ঐ ড্রাইবারের সারা জিবন সরণে থাকবে। শিক্ষার্থীদেরও শব্দ দূষণ নিয়ে আন্দলন করতে হবে। তাহলে ধিরে ধিরে শব্দ দূষণ বন্ধ করা সম্ভাব হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, যশোর জেলার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক বিল্লাল বিন কাসেম, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) এস এম মাহফুজুর রহমান এবং যশোর জেলা কার্যালয় সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. অনুপ দাস। আরো বক্তব্য দেন পরিবেশকর্মী ও পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীণ ওয়ার্ডের নির্বাহী পরিচালক আশিক মাহমুদ সবুজ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মসজিদের ইমাম এবং মোয়াজ্জিনসহ আরো অনেকে।
Discussion about this post