যশোর জেলা প্রতিনিধি, মনিরুজ্জামান মনির :
নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ। এ স্লগান নিয়ে এ বছর জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৩ এর উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।
অনষ্ঠানে অতিথিরা বক্তব্যে বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও (২৪ থেকে ৩০ জুলাই) সারা দেশব্যাপি উদযাপিত হচ্ছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ -২০২৩। মৎস্য আমাদের স্বনির্ভর করার পাশপাশি আমিষের ঘাটতিও পূরণ করছে। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্যখাতের অবদান অনেক বেশি। বর্তমান সরকারের সুচিন্তিত নীতি ও পরিকল্পনার মাধ্যমে চাষিদের প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থাপনা বিনিয়োগ ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশে মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে উৎপাদিত মাছের পরিমাণ ছিলো ৪৭.৫৯ লক্ষ মেট্রিক টন। যা দেশের মোট জিডিপির ২.৪৩ শতাংশ, কৃষিজ জিডিপির ২২.১৪ শতাংশ মৎস্য খাত থেকে আসে।
গতকাল সকাল ১১ টায় যশোর জেলা প্রশাসন এবং মৎস্য অধিদপ্তারের আয়োজনে যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে এ অনুষ্ঠান করা হয়।
প্রথমে কালেক্টরেট চত্ত্বর হতে শিল্পকলা একাডেমি পর্যন্ত ব্যানার ফেস্টুনসহযোগে বর্ণাঢ্য র্যালি হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ জাবের হাসান এবং গিতা পাঠ করেন লিপি পাল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জেলা মৎস্য অফিসার ফিরোজ আহাম্মেদ।
যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ (যশোর-৩)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিল্লাল হুসাইন, যশোর পৌরসভা মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গনী খান এবং যশোর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী।
সফল মৎস্যচাষী এবং উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে বক্তব্য দেন শার্শা উপজেলার কামরুজ্জামান টুটু। তিনি বলেন, আমি প্রথমে ১৭ শতক পুকুর নিয়ে মাছ চাষ শুরু করি। বর্তমানে আমি প্রায় ৭ একর জমিতে মাছ চাষ করছি। আমার ঘের থেকে গত বছরে ১’শ টন মাছ বহির বিশ্বে রপ্তানি করছি। এ রপ্তানি আমরা সরাসরি করতে চাই। এতে আমরা আরো বেশি লাভ করতে পারবো। তবে আমরা বর্তমানে পানি নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। বিদ্যুৎ বিল শিল্প খাতে না দিয়ে সেচ প্রকল্পের আওতায় দিলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়। বর্তমান ডিজিটাল সময়ে আমরা উন্নাত পদ্ধতিতে মাছ উৎপাদন করতে চাই। এর জন্য আপনাদের সকল ধরনের সহযোগিতা কামনা করছি।
অনুষ্ঠানে জেলা পর্যায়ে ৮ জন মৎস্য চাষিকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। তারা হচ্ছেন সরদার এগ্রোর হুমায়ন কবির তুহিন, মেসার্স রহমান ফিসারিজ’র কামরুজ্জামান টুটুল, মেসার্স হাবিব মৎস্য খামারের ইমামুল হাবিব, মৌ এগ্রো ফিশ’র কেরামত গাজী, আবিদা মৎস্য খামারের তুহিন রানা, শখের খামার এগ্রোর রকিব উদ্দিন, বাগদাহ বিল কৃষি ও মৎস্য উন্নায়ন প্রকল্পের রাজ্জাক সানা এবং প্রান্তিক চাষি শিশু নিলয় ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাছিমা বেগম।অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহসান হাবীব পারভেজ। অনুষ্ঠানের শেষে প্রধান অতিথি যশোর পৌরপার্কের পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
Discussion about this post