মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের নয়ানগরে ১০ শয্যা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের নতুন ভবনে চুরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চৌকিদার থাকা সত্তে¡ও এ ঘটনা ঘটে। এসময় বেচিন, ঝর্নাসহ প্রায় ২২ টি পানির কল খুলে নিয়ে যায়। তবে দুইদিন পার হলেও বিষয়টি গোপন রাখেন উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) শতদল বাড়ৈ। তার দাবি বাচ্চারা এগুলো করায় কাউকে জানানো বা আইনি সহযোগিতা নেয়ার প্রয়োজন হয়নি। এতে সাধারণ রোগীদের একদিকে ভোগান্তি আরেকদিকে বড় ক্ষতির আশংকাও রয়েছে।
এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা তথ্যাদি নিয়ে ফেরার পর দোষ এড়াতে উর্ধতন কর্মকর্তাদের তিনি অব-গত করেছেন বলে জানা গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ৩ তলা নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। তিন বছর যাবত কার্যক্রম চালালেও এখনো উদ্বোধন করা হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে একটি বাচ্চা প্রসব করানো শেষে সবাই চলে যায়। প্রতিদিনের ন্যায় হাসপাতাল পাহাড়ায় ছিলো চৌকিদার হুমায়ুন কবির। সকাল ১০ টার সময় হাসপাতালে আসলে তারা জানতে পারে নিচ তলার কয়েকটি ও দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার প্রায় সবগুলো বেচিন কল, ঝর্না ও পানির কল চুরি হয়ে গেছে। এবংকি দ্বিতীয় তলায় ওটি রুমে এসি, আইপিএস ও ব্যাটারিসহ অনেক দামি মালামাল থাকা সত্তে¡ও তালা ভেঙ্গে শুধু পানির কল ছাড়া আর কিছুই নেয়নি চোর। এসময় সব পানি পড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, রাত হলেই এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মাদকসেবিদের আড্ডা জমে উঠে। আর এসব কর্মকান্ডের সাথে হাসপাতালের কয়েকজন স্টাফ জড়িত রয়েছে। এবং এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অকেজো করে পরবর্তীতে সরকারি দামি মালামালগুলো অনায়াসে লুট করার উদ্দেশ্যে এ নাটকীয় চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ ব্যাপারে বদরপাশা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পিয়ন/চৌকিদার মো. হুমায়ুন কবির ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তার দাবি চোর বিল্ডিংএর পাশের পাইপ বেয়ে ছাদে উঠে ভিতরে ঢুকেছিলো।
দায়িত্বরত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শতদল বাড়ৈ বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার উদ্দেশ্যে জানান, শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে ক্লিনার তপনের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারি। পরে এসে দেখি কয়েকটি ট্যাপ নাই। মনে হয় বাচ্চারা দুষ্টামি করে ভেঙ্গে ফেলেছে। তবে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই। এ বিষয়ে থানায় জানিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানা নেই।
ইউনিয়ন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা স্টান্ডিং কমিটির সভাপতি ও ৫ নং ওয়ার্ড মেম্বার মাহবুব হাওলাদার জানান, এ চুরির বিষয়ে আগে আমাকে কিছু জানায় নাই। এখন দাদার (মেডিকেল অফিসার শতদল বাড়ৈ) ফোনে জানতে পেরে এসে দেখি বাইরের সব তালা ঠিক আছে। কিন্তু দ্বিতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারের তালা ভেঙ্গে বেচিন কল ও বাথরুমের পানির কল নিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে মোট ২২-২৫ টি পানির কল চুরি হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু হারিয়েছে কিনা তারা এখনো বলতে পারতেছে না।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক শনিবার মুঠোফোনে এ বিষয়ে কোন কিছু বলতে না পারলেও রবিবার দুপুরে জানান, আমি ঘটনাস্থলে আসছি। আমাদের যা করনীয় আছে তা করছি।
Discussion about this post