সফিকুল ইসলাম শিল্পী ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁয়ের রানীশংকৈল উপজেলা পরিষদের সামনে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি রানীশংকৈল শাখার ব্যানারে ‘শিক্ষককে মারপিট ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন, প্রতিবাদসভাসহ ইউএনওকে স্মারকলিপি প্রদান করেছে প্রাথমিক শিক্ষকরা।
মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে কয়েক ঘন্টা ধরে নির্যাতিত শিক্ষকরাসহ উপজেলার প্রায় শতাধিক প্রাথমিক শিক্ষকরা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়।
এতে শিক্ষক নেতাদের বক্তব্যের পাশাপাশি বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা বক্তব্যে অংশ নেন। বক্তারা বলেন, প্রশাসনের গড়িমসির কারণে আজ তাদের শিক্ষক সমিতির সদস্যদের নিয়ে এ প্রখর রোদে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানব বন্ধন করতে হচ্ছে। যা শিক্ষক সমাজের জন্য লজ্জাজনক একটি ঘটনা।
রাণীশংকৈল পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষকদের উপর মারপিটের ঘটনা দুঃখজনক ! কতিপয় সন্ত্রাসী এ ঘটনা ঘটিয়েছে এবং শিক্ষকরা এর যেন সুষ্ঠু বিচার পায়। তিনি আরোও বলেন, প্রশাসন চাইলে ২৪ ঘন্টা না ৬ ঘন্টায় জায়গাটি খালি করে দিতে পারে। অথচ তারা কেন নিরব থাকছেন এ বিষয়টি বোধগম্য নয়। তিনি ওসি এবং ইউএনও’র উদ্দেশ্যে বলেন, ” শিক্ষকদের এ জায়গাটি ২৪ ঘন্টার মধ্যে খালি করে দিন, তা না হলে শিক্ষকদের সাথে আছি, থাকবো এবং সক্রিয় আন্দোলনেও শামিল হবো। “
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অধ্যক্ষ সইদুল হক বলেন, ‘শিক্ষকদের মারপিটের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যদিও মামলাটিতে গরিমশি করেছেন প্রশাসন। তিনি অভিযোগের কন্ঠে বলেন, ‘আজ শিক্ষকদের গায়ে যারা হাত তুলেছে, শিক্ষকদের যারা অপমান করেছে, শিক্ষকদের যারা লাঞ্ছিত করেছে অথচ উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসন এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই। আমরা এটির নিন্দা জানাই, এটির প্রতিবাদ জানাই।’ তিনি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে শিক্ষকদের জায়গা ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন।
শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক গপেন্দ্র নাথ বলেন, আমরা ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা কঠোর অবস্থানে যাবো। এসময় শিক্ষক নেতারা ছাড়াও অনেকেই বক্তব্যে অংশ নেন।
এ প্রসঙ্গে থানা অফিসার ইনচার্জ এসএম জাহিদ ইকবাল বলেন, অভিযোগটি আমি পেয়েছি, এবিষয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা নং ৬৩৭।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন, শিক্ষকদের একটি স্মারকলিপি আমি পেয়েছি। তাছাড়া ওসিকে আমি মামলা নেওয়ার জন্য বলেছি, শিক্ষকদের গায়ে তারা হাত দিবে কেন? এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়।
প্রসঙ্গত – গত ২০শে ফেব্রুয়ারি শিবদীঘি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন সংলগ্ন প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ঘর সংস্কারের কাজ শুরু করলে এতে সহোদর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মকবুল হোসেন ও আজিজার রহমান আহত হন। ঘটনার এ দিনেই রানীশংকৈল থানায় মফিজুল ইসলাম, ওসমান গনি, আবু বক্কর, মোস্তাক,আবু সৈয়দ, মোবারক আলী, ইউনুস আলি, জামাল, হারুন, হাবীব, সেলিম ও রেজাসহ মোট ১১জনের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিব বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন বলে শিক্ষক নেতারা জানান।
Discussion about this post