নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে জমি রেজিষ্ট্রেশনে ১৬ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯শ ১১ টাকা ফাঁকি রাজস্ব অবশেষে ফেরত দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালে তৎকালীন সাব রেজিষ্টার ও অফিস সহকারীর যোগসাজসে এ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এঘটনায় দূর্নীতি দমন কমিশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রারের কাছে শিবলী মতিন নামের এক ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রারের কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জমির দলিল করার অভিযোগে দলিল লিখক মো. সেলিমকে সাময়িক বরখান্ত করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার মো. জিয়াউল হক। গত ২৩ জানুয়ারী এক আদেশে ওই দলিল লিখককে বরখান্ত করা হয়। পাশাপাশি ওই দলিল লিখককে সাব রেজিষ্টার কার্যালয়ে আসতে মানা করা হয়। এছাড়াও ফাঁকি দেওয়ার রাজস্ব আদায়ের জন্য বৈদ্যেরবাজার সাব রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবশেষে ১লা নভেম্বরে উৎস কর বাবদ ৪ লাখ ৬২ হাজার ২শ ৬২ টাকা, রেজিষ্ট্রেশন বাবদ ৩ লাখ ৮ হাজার ১শ ৬৫ টাকা, স্ট্যাম্প প্রশাসন বাবদ ৪ লাখ ৬২ হাজার ২শ ৬২ টাকা সোনালী ব্যাংক সোনারগাঁও শাখায় ও স্থানীয় সরকার কর বাবদ ৪ লাখ ৬২ হাজার ২শ ৫০ টাকা এনআরবিসি ব্যাংক মোগরাপাড়া শাখায় প্রদান করা হয়।
জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের চর লাউয়াদী মৌজায় প্রতি শতাংশ নাল জমির মূল্য ৩ লাখ ৩৩ হাজার তিন শত ৩৩ টাকা বাজার মূল্য নির্ধারণ করে সরকার। গত ২৪ এপ্রিল ২০১৬ সালে ৫৪৭২ নং দলিল মূলে দলিল গ্রহিতা সাহাপুর গ্রামের সহিদুল ইসলামের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার ও দাতা হিসেবে নানাখি গ্রামের সুরুজ মিয়া, মো. জায়েদ আলী ও রত্না বিবি সাব কাবলায় ওই মৌজায় ৪৮ শতাংশ নাল জমি ৬ লাখ টাকা মূল্যের ভিটি দেখিয়ে দলিল লিখক ১০৮ নং সনদধারী মো. সেলিম তৎকালীন বৈদ্যোরবাজার সাব রেজিষ্ট্রার আবু তাহের মো. মোস্তফা ও অফিস সহকারী নাসিমা আক্তারের যোগসাজসে দলিল সৃজন করে। যাহার সরকারী নির্ধারিত নাল জমির বাজার মূল্য এক কোটি উনষাট লক্ষ নিরানব্বই হাজার নয়শত চুরাশি টাকা। এ দলিলে ১৫ লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের রাজস্ব ও স্ট্যাম্প ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগকারী ব্যবসায়ী শিবলী মতিন জানান, আমি ওই এলাকায় জমি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিলে সরকারী রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি আমার নজরে আসে। সচেতন নাগরিক হিসেবে গুরুত্ব মনে করে অভিযোগ দায়ের করেছি। তবে রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি ধামাপাচা দিতে এ দলিলের বিপরীতে আরো একটি হেবা দলিল তৈরি করা হয়। ওই দলিলে নাল জমিকে ভিটি দেখানো হয়েছে।
বৈদ্যোরবাজার সাব রেজিষ্ট্রার আব্দুর রশিদ বলেন, দলিল গ্রহিত্রী তাসলিমা আক্তারের মাধ্যমে দুটি ব্যাংকের পে অর্ডারের মাধ্যমে ফাঁকি দেওয়ায় রাজস্ব ১৬ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯শ ১১ টাকা ফাঁকি রাজস্ব অবশেষে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দলিল লিখককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রার মো. জিয়াউল হক বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বৈদ্যোরবাজার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ফাঁকি রাজস্ব আদায় করে উপ- পরিচালকের কার্যালয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। ফাঁকি দেওয়ার রাজস্ব সরকারী কোষাগারে জমা হয়েছে।
Discussion about this post