নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে সরকারী খাল দখলমুক্ত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর রোববার লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী। সেই সাথে তাঁরা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড ভট্টপুর এলাকায় একটি কালভার্টের দাবী জানিয়েছেন। খাল দখলের ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, সরকারি খাল দখল হয়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছরের মধ্যে পৌর ভট্টপুর এলাকায় চরম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সোনারগাঁবাসী চরম জলাবদ্ধতায় পরেছে। শুধু পৌরসভাই নয় জরুরি ভিত্তিতে সোনারগাঁয়ের দখলকৃত অন্যান্য এলাকার খালগুলোও পুনরুদ্ধার করে খননের ব্যবস্থা করার দাবি জানান ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। অবৈধভাবে খাল দখলদারদের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সোনারগাঁয়ে খাল দখলে মহোৎসব চললেও প্রশাসনের নীবর ভূমিকা স্থানীয়দের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে যেসব খাল রয়েছে এর বেশির ভাগ খাল স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দখল করে নিয়েছে। অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বালু ভরাট করে গড়ে তুলেছে বাড়িঘরসহ যাতায়াতের জন্য রাস্তা ও দোকানপাট। ফলে ওইসকল এলাকায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ রয়েছে। অনেক স্থানে বছরের বেশির ভাগ সময়ই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন আবাদী জমি ও ফলজ গাছপালা জোয়ার ভাটার পানি না পেয়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে আবাদী জমি নষ্ট ও জন দূর্ভোগসহ খালের পানি বিনষ্ট এবং এডিস মশা জন্ম নিচ্ছে। ফলে এ পানি ব্যবহার অনুপুযোগী হয়ে পড়েছে। পানিতে গাবাদি পশু গোসল করানোসহ কৃষি জমিতেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
পৌর এলাকায় ভট্টপুর গ্রাম দিয়ে বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ডের চাঁন্দের কৃত্তি গ্রাম হয়ে বয়ে যাওয়া খালটি এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা।
অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জমান মধুর নেতৃত্বে তার ভাতিজা মাসুম বিল্লাহ ও মালেক একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কিছু অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে প্রভাবশালী ভূমিদস্যু, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও দালালরা আঁতাত করে প্রথমে খালের তীরবর্তী স্থানগুলো দখল করে নিচ্ছে। পরে বালু ভরাট করে পুরো খালই দখলে নিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোনারগাঁ পৌরসভায় ঐতিহাসিক পঙ্খিরাজ খালটির উদ্ধবগঞ্জ হতে ভট্টপুর গ্রামের পাশ দিয়ে ভয়ে যাওযা দুপাশে অবৈধ স্থাপনা নির্মান হচ্ছে। ঐতিহাসিক পঙ্খিরাজ খাল দখল করে ভট্টপুর গ্রামের আনিছুল হক খাঁন মাটি ভরাট করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের বাধা সৃষ্টি হয়। পৌর এলাকায় বসবাসরত কয়েক হাজার মানুষ খাল খননের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
সোনারগাঁ পৌর এলাকার ব্যবসায়ী আঃ রহিম খাঁন জানান, প্রতিটি বাড়িতে নৌকায় যাতায়াত করা যেতো, সবগুলো খালই প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছে,খালগুলোর চিহ্ন পর্যন্ত রাখেনি। দখল হয়ে যাওয়া খাল পূনরায় সচল করার জন্য প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসী জোড় দাবি জানান।
সোনারগাঁয়ের ভট্টপুর এলাকার অভিযুক্ত খাল দখলকারী আবদুল মালেক বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, খালের জমি ছেড়ে আমি আমার নিজের যায়গায় বাড়ি নির্মাণ করেছি।
এলাকাবাসীর দাবী পঙ্খিরাজ খাল দখল মুক্ত করে ভট্টপুর গ্রামের আনিছুল হক খাঁন মাটি ভরাট করে দোকান ভেঙ্গে কালভার্ট করার দাবী জানান, এ ব্যাপারে আনিছুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান সরকারি খাল অনেকে দখল করে রেখেছে তাই আমি একটু দখলে রেখেছি, যদি প্রসাশন বলে তাহলে আমি দোকান সরিয়ে দেব। এ ব্যাপারে পৌরসভার সচিব এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রকৌশলী তানভিরের সাথে যোগাযোগ করেন। স্থানীয় ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জমান মধু বিষয়টি তোয়াক্কা না করে বলেন, সিডিউলে যা কাজ আছে তাই হবে এর বাহিরে কোন কাজ করা হবে না।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী জানান, দখলকৃত খালগুলো ম্যাপ দেখে অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙে উচ্ছেদ করে পূনরায় খালগুলো উদ্ধার করা হবে।
Discussion about this post