মো. সাইদুর রহমান, বরগুনা প্রতিনিধি :
দীর্ঘ ১৭ বছর পর বরগুনা জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণা হওয়ায় নতুন করে চাঙ্গা ভাব ফিরেছে যুবলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে শহরের অলিগলি সর্বত্রই এখন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে যুবলীগের নাম। সময় মত কাউন্সিল না হওয়ায় যুবলীগের হারানো গৌরব ডুবতে বসেছিল বরগুনার রাজনীতির মাঠে।
এমনকি মাঠের কর্মীরাও ঝিমিয়ে পড়েছিল যুবলীগের। রাজনৈতিক কোন কর্মকান্ডেও সংগঠনটির অবস্থান প্রায় নিস্ক্রিয়ই ছিল বলা চলে। অবশেষে গেল ৬ মার্চ নতুন কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে বরগুনা যুবলীগের রাজনীতিতে।
এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সদ্য ঘোষিত জেলা যুবলীগ সভাপতি রেজাউল কবির এটম বলেন, ‘আমাকে জেলা যুবলীগের সভাপতি করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপশি দলের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিলকেও আমার অন্তরের অর্ন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে বরগুনা জেলা দক্ষিনের শেষ প্রান্তে, সেই সুবাদে আমরা অবহেলিত হলেও বাংলাদেশের মধ্যে বরগুনা জেলা যুবলীগ প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় সবার আগে সারা দিবে বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে বরগুনা জেলা যুবলীগ এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত ভূমিকা পালন করবে।’
পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা করার ক্ষেত্রে কাদের স্থান দেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ত্যাগী নেতা কর্মী, যারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত, যারা ইতিপূর্বে আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর সকল ডাকে সারাদিয়ে আসছে তাদেরকেই স্থান দেয়া হবে।
বিতর্কিতদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিতর্কীদের নিয়ে আমি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারব না, দলের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক যেই সিদ্ধান্ত দিবে সেই মোতাবেক আমরা দায়িত্ব পালন করব।’
অপরদিকে সদ্য ঘোষিত বরগুনা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নতুন কমিটির মাধ্যমে বরগুনা যুবলীগ আরো শক্তিশালি হয়ে উঠেছে। তাই আমি শ্রদ্ধাভরে কৃতজ্ঞতা জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ব্যক্তি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিল ভাইকে। তাদের সু-পরিকল্পিত নেতেৃত্বে শেখ ফজলুল হক মণির নিজ হাতে গড়া যুবলীগ এখন মানবিক যুবলীগে পরিণত হয়েছে। তাই কেন্দ্রেীয় নির্দেশ বাস্তবায়নে বরগুনা যুবলীগ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে।
আবুল কালাম আজাদ আরো বলেন,‘ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে বরগুনা যুবলীগ সব সময় ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করে যাবে। এসময় যুবলীগের নাম ব্যবহার করে যারা অপকর্ম করার চেষ্টা করছে তাদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, যুবলীগে কোন বিতর্কিত ব্যক্তিদের স্থান হবে না। বরগুনা যুবলীগ হবে ত্যাগী এবং নিবেদিত কর্মীদের আশ্রয়স্থল।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত বছরের ২০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও টাউন হলে বরগুনা জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গত ৬ মার্চ বরগুনা জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণা করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিল। চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত তালিকায় মোঃ রেজাউল কবির এটম সভাপতি এবং আবুল কালাম আজাদ সাধারণ সম্পাদক নাম ঘোষণা করে ২৮ জনের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
আমতলী উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বাদল বলেন , বরগুনায় যুবলীগের একটি স্বচ্ছ কমিটি দেয়া হয়েছে। আশা এই কমিটি আমতলী উপজেলার বুড়ো হয়ে যাওয়া ও আত্মীয় নির্ভর কমিটি থেকে আমতলী উপজেলা যুবলীগকে রেহাই দিবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও উলেখ করা হয়, যুবলীগের জেলা কমিটি ১০১ সদস্যের হলেও এ কমিটিতে ২৮ জনের নাম দেওয়া হয়েছে। বাকি পদগুলো কমিটি ঘোষণার এক মাসের মধ্যে পূরণ করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
Discussion about this post