মেহেদী হাসান,জামালপুর প্রতিনিধিঃ
আর্থিক সংকটে চিকিৎসা করাতে পারছেন না মাদারগঞ্জের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা’ এমন খবর রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ হলে নজরে আসে জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের। রোববার রাতেই তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বাসর (৭০) এর সাথে মুঠোফোনে কথা বলেন। সোমবার সকালে মির্জা আজম ওই মুক্তিযোদ্ধাকে ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। অসুস্থ ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার উন্নত চিকিৎসার দায়িত্ব নেন মির্জা আজম। সেই অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাকে রক্তদান করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বিএম রাজন।
১১নং সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বাসরের বাড়ি মাদারগঞ্জ উপজেলার যমুনার দ্বীপচর সুখ নগরী গ্রামে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাড়িতে ফিরে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন তিনি। ১৯৮০ সালে যমুনার ভাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধা বাসরের বসতবাড়ি ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়। এর পর সুখনগরী গ্রামের শেষপ্রান্তে টিনের ছোট্র একটি ঘর তুলে বসবাস করে আসছেন। স্ত্রী, এক পুত্র, ৬ কন্যা নিয়ে অতিকষ্টে জীবন যাপন করেন। সব কন্যা বিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র পুত্র ৩০ বছর বয়সের জহুরুল ইসলাম এইচ এসসি পাশ করার পর আর্থিক সংকটে আর লেখাপড়া হয়নি। চাকুরির জন্য বিভিন্ন স্থানে ধর্না দিলেও তদবিরের অভাবে শেষ পর্যন্ত পাননি। বর্তমানে বাসরে পরিবারের সদস্য ৫ জন। গত ২ বছর ধরে বাসর বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত। পরিবার পরিজন নিয়ে অতিকষ্টে জীবন যাপন করছেন তিনি। করোনাভাইরাসে লকডাউনের কারনে ঘরে বন্দী ছিলেন। রোববার একমাত্র পুত্রকে সাথে নিয়ে অটোরিকশায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিস দেখতে আসেন বালিজুড়িতে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিস অটোরিকশায় বসেই এক নজর দেখে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় দেখা হয় মাদারগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলামের সাথে। পরে নজরুল তাকে নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটার্স দেন। নজরে আসে এলাকার সংসদ সদস্য জননেতা মির্জা আজমের। এরপর মির্জা আজম যোগাযোগ করেন এবং তার উন্নত চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। মির্জা আজম ওই পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থাসহ চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম আরো বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। টাকার অভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা বাসরসহ উপজেলার অন্য কোনো মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা যাতে বন্ধ না হয় সে বিষয় খেয়াল রাখার কথা তাকে জানিয়েছেন মির্জা আজম এমপি।উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বিএম রাজন এই প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের রাজনৈতিক অবিভাবক সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মির্জা আজম ভাই অনেক বড় মনের মানুষ । একজন মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি মুমূর্ষু রোগীদের নিয়মিত রক্ত দিয়ে থাকি।কিন্তু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে কাউকে রক্ত দেওয়ায় আমার খুব ভালো লেগেছে। আত্নিক শান্তি অনূভব করছি।
Discussion about this post