স্টাফ রিপোর্টারঃ
গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে দুপুর পৌনে ১টার দিকে ইশরাককে মতিঝিল থানা থেকে আনা হয়। এরপর তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। পরবর্তীতে বেলা ২টার দিকে ইশরাকের পক্ষে মাসুদ আহম্মেদ তালুকদারসহ কয়েকজন আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন।
শুনানিতে তারা বলেন, এই মামলায় ইশরাকসহ আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। মামলার ৪২ জন আসামির বাকি সবাই জামিনে আছেন। ইশরাক মামলার পরই হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। এরপর হাইকোর্টের আদেশ নিম্ন আদালতে অন্তর্বর্তী জামিন নেন। পরবর্তীতে স্থায়ী জামিন বিষয়ে শুনানির দিনে কোভিডের কারণে তিনি আদালতে হাজির হতে পারেননি।
তারা আরও বলেন, ইশরাক হোসেন জামিনের অপব্যবহার করেননি। কোভিডের বিষয়টি আদালত বিবেচনায় না নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেয়াটা অন্যায্য হয়েছে। তিনি অবিভক্ত ঢাকার সর্বশেষ মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করেছেন। ইতোমধ্যে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে সারাদেশে সুনাম অর্জন করেছেন। তাই রাজনৈতিক কারণে তার নামে ওয়ারেন্ট দেয়া হয়েছে। আমরা তার জামিনের প্রার্থনা করছি।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি আজাদ রহমান জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম তামান্না ফারাহ জামিনের আবেদন নাকচ করে এ আদেশ প্রদান করেন।
তবে শুনানি চলাকালে আদালত প্রাঙ্গনে বিএনপির দু-গ্রুপের মধ্যে দাওয়া পাল্টা দাওয়ার মত ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্ঠা করে।
বুধবার মতিঝিল এলাকায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল দক্ষিণের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। লিফলেট বিতরণের সময় দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাকে আটক করে মতিঝিল থানা পুলিশ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকার ১৮ আসনের নির্বাচন বানচাল করার লক্ষে আসামিরা একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিপরীত পাশে অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পুড়িয়ে মারার উদ্দেশ্যে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে গাড়িতে থাকা যাত্রীরা প্রাণে বেঁচে যায়। এ ঘটনায় বিএনপি নেতা ইশরাকসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা করেন পুলিশের এসআই আতাউর রহমান ভূঁইয়া।
এরপর ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন ইশরাক। সেই জামিনের মেয়াদ শেষে ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নেন তিনি। মহানগর দায়রা জজ সিএমএম আদালত থেকে নথি তলবপূর্বক জামিনের বিষয়ে ওই বছর ১৮ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। তবে নির্ধারিত দিনে ইশরাক আদালতে হাজির হননি। তার পক্ষে সময় আবেদন করা হয়। বিচারক সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানা অনুযায়ী ইশরাককে গ্রেফতার করা হয়।
Discussion about this post