মেহেদী হাসান, জামালপুর প্রতিনিধিঃ
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার, প্রযোজক, নাট্যকার, গীতিকার, সুরকার, লেখক ও অভিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের আজ ২য় মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে তাকে স্মরণ করে তার নিজ জন্মভূমি জামালপুরে এক শোক র্যালির আয়োজন করা হয়।
আজ সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে আমজাদ হোসেন চর্চা কেন্দ্র সহ ৭০টি সংগঠনের অংশগ্রহণে এ শোক র্যালিটি বকুলতলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে জামালপুর পৌর কবরস্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাজ্জাদ আনসারী, আমজাদ হোসেনের ছোট ভাই ফরহাদ হোসেন মানু,আমজাদ হোসেনের ছেলে নির্মাতা সাজ্জাদ হোসেন দোদুল,আমজাদ হোসেন চর্চা কেন্দ্রের সদস্য মারুফা আনোয়ার পারুল, বিপাশা,সাগর মূখার্জী, নাট্যকর্মী মেহেদী হাসানসহ পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
এছাড়াও দিনব্যাপী কোরানখানি, বাদ আসর মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে। সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত হবে আমজাদ হোসেন স্মরণ সভা। তার জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করবেন গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ঘনিষ্ঠজন। এছাড়াও আমজাদ হোসেনের সারা জীবনের কর্মস্থল এফডিসিতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যোগে আমজাদ হোসেন স্মরণ সভা, মিলাদ মাহফিল ও তবারক বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী আমজাদ হোসেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গুণী এই চলচ্চিত্র নির্মাতার স্মৃতি ধরে রাখতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এমন প্রত্যাশা জামালপুরবাসীর।
উল্লেখ্য, ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্ম নেয়া আমজাদ হোসেন চলচ্চিত্রে এসেছিলেন অভিনয়ের মাধ্যমে। ১৯৬১ সালে ‘তোমার আমার’ নামে একটি ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। পরবর্তীতে মনোনিবেশ করেন চিত্রনাট্য রচনা ও চলচ্চিত্র পরিচালনায়। ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই ভাই’, ‘পিতা পুত্র’ ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘ভাত দে’র মতো ছবিগুলো নির্মাণ করে তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।
এতসব অনবদ্য সৃষ্টির জন্য বহু পুরস্কৃতও পেয়েছেন আমজাদ হোসেন। ১২ বার জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এর মধ্যে আছে শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার, শ্রেষ্ঠ গীতিকার, শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা, শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার ও শ্রেষ্ঠ প্রযোজকের পুরস্কার। এছাড়া তার ঝুলিতে ছয়টি বাচসাস পুরস্কার, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারও রয়েছে। এমন একজন কিংবদন্তিকে হারানোর শুন্যতা চিরকালই অনুভব করবে বাংলা চলচ্চিত্র।
Discussion about this post