মনিরুজ্জামান মনিরঃ
গত সোমবার সারাদিন ঝড়ের প্রভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে মাঝারি বৃষ্টি অব্যাহত ছিলো। ফলে বৃষ্টি এবং ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ছিলো আমন ধান ও সবজি চাষিরা। তবে সিত্রাংয়ে তেমন বেশি প্রভাব না পড়লেও ৬০ হেক্টর জমির ধানের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস। কৃষি তথ্য মতে এঝড়ের গতিবেগ যেভাবে ছিলো সে পরিমাণ সিত্রাং আসলে সবজি এবং ধান ব্যাপক হারে নষ্ট হতো। অনেক মাঠে জমির ধান জায়গায় জায়গায় পড়ে গেছে এবং মাঠের সবজি গাছও কিছু হেলে পড়েছে।
সদর উপজেলা বীর নারায়নপুর গ্রামের সবজি চাষি শেখসাদি জানান, মাঠে কপির গাছ কিছুটা হেলে গেছে। আর যারা বৃষ্টির আগের দিন কপিতে সেচ দেছে তাদের একটু সমস্যা হবে।
সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের কৃষক লোকমান হোসেন জানান, তেমন বেশি ক্ষতি হয়নি। তবে ঝড়ের কথা লোকে যেভাবে বলছিল সে ভাবে হলে ধান মাঠে থাকতো না।
পাঁচবাড়িয়া কাচারী পাড়ার কৃষক আবু তালেব জানান, যে সময় ঝড় বাতাস হয়েছে এসময় ধানের চিটা পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। আমি এবার ৫বিঘা ধান লাগাইছি। মাঠে যেয়ে দেখি জায়গায় জায়গায় ধান পড়েছে। এই পোড়া ধানগুলো হবে না। বেগুন গাছ গুলা এলো মেলো হয়েগেছে । গাছগুলো মারা যাবে।
কৃষক বীর মুক্তিযুদ্ধ শামসুদ্দিন আহমে¥দ জানান, যে ধান গুলো পড়ে গেছে সেই খান গুলো পোচে যাচ্ছে। তবে ঝড়ের যে আসংখ্যা ছিল সেটা হলে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হোতাম।
নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মধু গ্রামের কৃষক আলম জানান, মাঠের ধান কিছু পড়েছে। এতে তেমন বেশি ক্ষতি হবে না। যেভাবে ঝড়টার কথা শুনছিলাম। সেভাবে ঝড় হলে সব সবজি এবং ধান নষ্ট হতো। আল্লাহ আমাদের উপর রহমত করেছে।
চৌগাছা যাত্রাপুর গ্রামের কৃষক আমজাদ আলি জানান, মাঠে আমন ধানের শীষ পূর্ণ হচ্ছে। এমন সময়ে ঝড়ে ধান গাছগুলো পড়ে গেলে । ধানের সঠিক ফলন না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ সময়ে এসে ধানের জন্য এই ঝড় ক্ষতির কারণ ছিলো। এই বৃষ্টি ও ঝড় যদি অব্যাহত থাকতো তাহলে ধান অনেকটাই নষ্ট হয়ে যেতো।
সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুর গ্রামের সবজি চাষি আমিন উদ্দিন জানান, ভারি বৃষ্টিপাত হয়নি, তেমন ক্ষতি হবে না সবজিতে। তবে যদি ঝড় সেই পরিমাণ তাহলে কৃষকদের ভোগান্তি ও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতো।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মন্জুরুল হক জানান, বৃষ্টি ও ঝড়ে তেমন বেশি ফসলের ক্ষতি হয়নি। যশোর জেলায় মোট ৬০ হেক্টর জমির ধানের ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান ধানের ভিতরে আগেই পরাগায়ন হয়ে যায় । এতে তেমন কোন সমস্যা নেই। আর রবি ফসলের পানি নিষ্কাশনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গা থেকে পানি সরে গেছে। তবে আগাম ২ হাজার পরিমাণ জমির সবজি এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেলো। ঝড়ের গতি যে ভাবে ছিল সেভাবে ঝড় হলে ফসলের অনেক ক্ষতি হতো।
Discussion about this post