ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের নাথপাড়ায় বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের দাবী করা ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় বৃদ্ধা নাছিমা বেগম (৫২) কে পিটিয়ে আহত করার ঘটনার এখনো কোনো কূল কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। হামলার ঘটনায় কালীকচ্ছ নাথ পাড়া এলাকার মৃত জলফু মিয়ার ছেলে রবিন মিয়া ও তার ভাই পলাশসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়েরের পর বিজ্ঞ আদালত সরাইল থানা পুলিশকে বিষয়টির তদন্তভার দেয়। তবে গেল দুই মাসেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি সরাইল থানার পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি প্রতিনিয়ত আসামীদের হুমকী-ধামকীতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
সরজমিনে হামলার শিকার ওই পরিবারটির সাথে কথা বলে এবং মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, বিগত ১/ দেড় বছর আগে নাছিমা বেগমের ভাই প্রবাসী রতন মিয়া নাথ পাড়ায় একটি জায়গা ক্রয় করেন। তবে তিনি প্রবাসে থাকায় বোন নাছিমা বেগম সম্প্রতি সেই স্থানে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে দেখভাল করে আসছিলেন। এ সময় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী একাধিক মামলার আসামী রবিন মিয়া নাছিমা বেগমের কাছে বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবী করতে থাকে। এক পর্যায়ে রবিন ও তার ভাই পলাশসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা নাছিমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। এতে নাছিমা সেই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ২৪ এপ্রিল রবিন, পলাশসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা মিলে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে নাছিমাকে বেধরক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসার জন্য পাঠায়। সেখানে তিনি বেশ কয়েকদিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন। ঘটনার পর নাছিমা বেগম বাদী হয়ে ২৮ এপ্রিল আদালতে একটি চাঁদাবাজী মামলা করেন। আদালত বিষয়টির তদন্তভার সরাইল থানাকে দেয়। মামলায় অভিযোগ আনা হয় কালীকচ্ছ নাথ পাড়া এলাকার মৃত জলফু মিয়ার ছেলে রবিন মিয়া ও তার ভাই পলাশসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে।
নাছিমা বেগম জানান, হামলার ঘটনায় মামলা করার পর সরাইল থানা পুলিশের এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে সকলের সাথে কথা বলে এবং স্বাক্ষীদের জবানবন্দি নিয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ঘটনা ও তদন্তের প্রায় দুই মাস পার হলেও তিনি এখনো তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দিচ্ছেন না। তিনি নানা টালবাহানায় সময় ক্ষেপন করছেন। এতে মামলার আসামীরা বেপরোয়া হয়ে নানা সময় আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যসহ স্বাক্ষীদের হুমকী ধামকী দিয়ে আসছে। এতে স্বাক্ষীসহ আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিনি আরো বলেন, হুমকী ধামকীর বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামকে জানালেও তিনি তাতে গুরুত্ব দিচ্ছেনা না। বরং তিনি আমাদেরকে সন্ত্রাসী কর্তৃক হুমকীর ভিডিও ধারণে করতে বলে থাকেন। এখন এমনিতেই আমরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত তার উপর ভিডিও করব কিভাবে। আমরা ঘটনাটির দ্রæত তদন্ত শেষে দায়িদের দৃষ্টানমূলক বিচার দাবী করছি।
এ বিষয়ে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম হোসেন জানান, ঘটনা যাই ঘটেছে তার তদন্ত চলছে। তদন্তে কোন প্রকার ঢিলেঢালাভাব কিংবা কারো দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কিছু নেই। বিষয়টি কোর্ট পিটিশন। তদন্তকারী কর্মকর্তা যথা সময়ে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
Discussion about this post