মেহেদী হাসান ,জামালপুর প্রতিনিধিঃ
জামালপুরের তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানার সিবিএ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়েছে কারখানা এলাকা। দেশের বৃহত্তম ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা সিবিএ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে সংঘাতে জড়িয়েছে। পরিবেশ অশান্ত করার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ও সিবিএ’র সাবেক একজন সাধারণ সম্পাদককে দায়ী করছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, যমুনা সার কারখানা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাধারণ সভা করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। এর আগে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাতীয় শ্রমিক লীগ সরিষাবাড়ী আঞ্চলিক শাখা সভা করেছে। ওই সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে যমুনা সার কারখানা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচনে একক প্যানেল প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভা করে জাতীয় শ্রমিক লীগের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষন করে। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগ একক প্যানেল প্রদানের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াবস্থায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যমুনা সার কারখানা এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশরাফুল আলম মানিকের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশ সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের ৫৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ পর্যন্ত পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ৫ জনকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে যমুনা সার কারখানার একাধিক শ্রমিক-কর্মচারী ও জাতীয় শ্রমিক লীগের একাধিক নেতার অভিযোগ, সার কারখানার সিবিএ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত জোটের সাথে হাত মিলিয়ে মাঠে নেমেছে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক ও তার বোন জামাই সিবিএ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় শ্রমীক লীগের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে বিএনপি-জামায়াত সমর্থক ক্যাডারদের সাথে নিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত করেছেন। সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ২০০১ সাল ও ২০০৬ সালে বিএনপির প্যানেল থেকে সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। মোঃ শাহজাহান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ২০১৮ সালে সিবিএ এর সাধারণ থাকাকালে তার নেতৃত্বে কারখানার নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক কর্মচারীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় তার শ্যালক রফিকসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয় এবং মোঃ শাহজাহানকে অন্য কারখানায় বদলী করা হয়। সম্প্রতি তিনি পুনরায় যমুনা সার কারখানায় বদলী হয়ে আসার পর থেকেই অশান্ত হয়ে উঠেছে কারখানা এলাকা।
সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মীর রকিবুল হক (শুক্রবার রাতে) সাংবাদিকদের বলেন, যমুনা সার কারখানায় আধিপত্য নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় উভয় পক্ষের সমর্থকদের এলাকা ত্যাগ করতে বলায় তারা পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ১৫/১৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। যাহা ফৌজদারী অপরাধ। এ ঘটনায় পুলিশ মামলা দায়ের করেছে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে রফিকুল ইসলাম রফিক ও মোঃ শাহজাহানের মুঠোফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া গেছে।
সিবিএ নির্বাচনকে কেন্দ্র অশান্ত হয়ে উঠা যমুনা সার কারখানা এলাকার পরিবেশ শান্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এমন প্রত্যাশা সাধারণ শ্রমিক-কর্মচারীদের।
Discussion about this post