জামালপুর প্রতিনিধিঃ জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তিসহ ৪ দফা দাবিতে ২য় দিনের মতো ধর্মঘট পালন করছে চিকিৎসকরা।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে ঘোষনা ছাড়াই চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখেছে জেলার বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতালগুলো। এছাড়া চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখেছে জেলার ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো।
তবে সরকারি সকল হাসপাতালে অন্তবিভাগ ও জরুরী বিভাগ চালু রয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়।
হঠাৎ করে পুরো জেলায় চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলার কয়েক হাজার রোগীকে।সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া শিশু ও বৃদ্ধ রোগী এবং তার স্বজনরা।
সোমবার সকালে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় জরুরী বিভাগের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত থাকলেও বহির্বিভাগে কোনো চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী না থাকায় হাসপাল ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
হাসপাতালে এসে চিকিৎসক না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন শতশত রোগী ও তাদের স্বজনরা। এছাড়া অন্তবিভাগে রোগীদের গনহারে ছুটি দেওয়া হচ্ছে বলেও রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেছে।
বেসরাকারী ক্লিনিক হাসপাতালগুলোতেও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। গুরুতর অসুস্থ রোগীরা চিকিৎসার জন্য পাশের জেলা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগি রোগীর স্বজন সদর উপজেলার দিগপাইতের আমজাদ হোসেন বলেন, আমার বাবা ইসহাক আলী হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। সরকারী হাসপাতাল ও বেসরকারী ক্লিনিক ঘুরে কোথাও ডাক্তার না পেয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। জামালপুর থেকে ময়মনসিংহের ৬৭ কিলোমিটার ভাঙ্গাচুরা পথ পেড়িয়ে যেতে হচ্ছে অসুস্থ রোগী নিয়ে। ডাক্তারদের উপর হামলাকারীদের শাস্তি দিতে চিকিৎসা বন্ধ রেখে কেন? কতিপয় অপরাধীদের জন্য আমাদের খেসারত দিতে হচ্ছে এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: মাহফুজুর রহমান সোহান এই প্রতিবেদককে বলেন- “শুক্রবার দুপুরে একজন নারী রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বজনরা হাসপাতালের জরূরী বিভাগের কমর্রত চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উপর হামলা করে হাসপাতালের সম্পদ বিনষ্ট করেছে। অবিলম্বে হামলায় জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দেয়া না পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মকলেছুর রহমানকে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আজ বিকাল ৪টায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। তদন্ত প্রতিবেদন দেখে পরবর্তীতে চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ কর্মসূচী ঘোষনা করবেন বলে জানান তিনি।”
তিনি আরো বলেন-“শুধু বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ। কিন্তু অন্তবিভাগ এবং জরুরী বিভাগ চালু রয়েছে। এছাড়া প্রসূতি মায়েদের জরুরী সেবা প্রদান চালু রয়েছে বলে জানান তিনি।”
জামালপুর সদর থানার ওসি রেজাউল হোসেন খান বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করতে দায়িত্বটুকু পালন করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামীসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।
Discussion about this post